বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
এবার তারা ঠিক করেছে, শুধু সরকারিস্তরে ব্যাপক প্রচারই নয়, রাজ্যজুড়ে প্রত্যেক রোগী কত টাকার ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে পেলেন, তা বোঝাতে বিল ধরিয়ে দেওয়া হবে। সরকার যে রাজ্যের মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়ে ‘যেমন কথা, তেমন কাজ’— এই নীতিতে বিশ্বাস করে, তা হাতেনাতে প্রমাণ করার জন্যই এই উদ্যোগ। এমনটাই জানা গিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এক শীর্ষ সূত্রে। ওই সূত্রের বক্তব্য, সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় সবকিছু যে বিনা পয়সায় পাওয়া যাচ্ছে, তার ফলে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন, এ তো আমাদের প্রাপ্যই ছিল। অথচ সেই চিকিৎসাই বেসরকারি হাসপাতালে করতে গেলে, সেই দামি দামি ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে গেলে, কত টাকা যাচ্ছে, তা ধারণার বাইরে অধিকাংশ মানুষেরই। সে কারণে হাতে হাতে বিল ধরিয়ে দিলে, অন্তত এই বোধটা থাকবে, কত টাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা আমরা সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় পাচ্ছি।
কিন্তু, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন দানা বেধেছে। এক, নিঃস্বার্থে উপকার করে, সেই উপকার বারবার মনে করিয়ে দেওয়াটা কি ঠিক? দুই, রাজ্যবাসীর জন্য সুলভে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেই দায়িত্ব পালন করে সরকার কতটা দায়িত্ববান, রাজ্যবাসীকে তা মনে করিয়ে দেওয়াটা কি উচিত? দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, অনেক ভেবেচিন্তেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে এই পরিষেবা সদ্য সদ্য পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে শুরু হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যালে যেমন এন্ডোক্রিনোলজি এবং অঙ্কোলজি— এই দুই বিভাগে আসা রোগীদের হাতে হাতে বিল ধরানো হচ্ছে। ধাপে ধাপে অন্যান্য বিভাগেও তা চালু হবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যপ্রযুক্তি শাখার এক পদস্থ কর্তা বলেন, সমস্ত সরকারি হাসপাতালেই এই পরিষেবা চালু হবে। শুধু ওষুধ নয়, ইন্ডোর এবং আউটডোরের যাবতীয় খরচও বিল আকারে করে, রোগীদের ধরিয়ে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র তালিকায় থাকা সরকারি হাসপাতালের রেট চার্ট ধরে বিল তৈরি করা হবে। মেডিক্যালের সুপার ডাঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি শুরু হয়েছে। সুগার এবং ক্যান্সারের ফ্রি রোগীদের জন্য সরকার প্রচুর খরচ করে থাকে। ওই দুই বিভাগ দিয়ে তাই শুরু করেছি।
প্রসঙ্গত, ফ্রি চিকিৎসা চালুর পর সরকারি হাসপাতালে আসা রোগীরা যে সব ধরনের চিকিৎসা বিনা পয়সায় পাচ্ছেন শুধু তা-ই নয়, লক্ষ লক্ষ টাকা দামের ওষুধ ও ইঞ্জেকশনও বিনা পয়সায় তুলে দেওয়া হচ্ছে গরিব রোগীদের হাতে। শুধু ওষুধই নয়, ডি-ফ্রিব্রিলেটর, পেসমেকার, স্টেন্ট, অর্থোপেডিক যন্ত্রপাতিও মিলছে নিরখচায়। প্রাইভেটে যার খরচ কয়েক লক্ষ। সরকার সেকথাই মনে করিয়ে দিতে চাইছে রোগীদের— এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।