বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
নির্বাচনী সংস্কারের দাবি এবারের একুশে জুলাই ফিরিয়ে আনলেন মমতা। ১৯৯৩ সালে এই দিনে সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিতে পথে নেমেছিলেন। সেদিন তিনি ছিলেন কংগ্রেসের যুব নেত্রী। এবার ইভিএম বাতিল করে ব্যালট ফেরাতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা। নিজে তখনও সভায় এসে পৌঁছননি। ব্যালটে ভোট করানোর দাবিকে আম জনতার দরবারে হাজির করতে অবতীর্ণ হলেন অভিষেক। পরের বক্তা হিসেবে তাতে সুর মেলালেন শুভেন্দুও। দুজনের নিশানায় বিজেপি। উল্লেখ্য, সপ্তদশ লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে বিজেপি নেতৃত্ব রাজ্যে আসন প্রাপ্তি নিয়ে যে ভবিষ্যদ্বাণী শুনিয়েছিল, তা বাস্তবের সঙ্গে মিলে গিয়েছিল। ফল প্রকাশের পরেই মমতা সেদিকে ইঙ্গিত করে ইভিএম কারচুপির প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। এদিন অভিষেক ও শুভেন্দুর ভাষণেও সিংহভাগ জুড়ে ছিল ইভিএম প্রসঙ্গ। বিজেপির উদ্দেশে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, বুকের পাটা থাকলে ব্যালটে ভোট করে দেখাক। ব্যালটে ভোট হলেই ওরা হারবে। তিনি বলেন, মেশিন নয় ব্যালট ফোরাও— এই মন্ত্রকে সামনে রেখে গ্রামে গঞ্জে আন্দোলন গড় তুলতে হবে। তাঁর দাবি, সিপিএমের হার্মাদ এখন বিজেপির জল্লাদে পরিণত হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। ব্যালটে ভোট হলে আগামী বিধানসভা ভোটে আড়াইশোর বেশি আসন নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরবে। শুভেন্দু মনে করিয়ে দিয়েছেন, লোকসভা ভোটের কয়েক দিনের মধ্যে কর্ণাটক, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ডে পুর ও পঞ্চায়েত ভোট ব্যালটে হতেই সেখানে বিজেপি হেরেছে।
লোকসভা ভোটে আসন কমায় এবারের শহিদ সমাবেশের জমায়েত নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল বিরোধীরা। এদিন ধর্মতলায় উপচে পড়া ভিড় দেখে আত্মবিশ্বাসী শুভেন্দু বলেন, সমস্ত অপপ্রচার, কুৎসা উড়িয়ে দিয়ে দুই বঙ্গ থেকেই মানুষ এসেছে। তিনি বলেন, তৃণমূল উন্নয়নকে অস্ত্র করে লড়তে চায়। বিজেপি বাংলায় যে সংস্কৃতি আনতে চায়, লড়াইটা তার বিরুদ্ধেও। শুভন্দেুর দাবি, বাংলার সংস্কৃতি জানলে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙতো না। নাম না করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, বর্ণপরিচয়ের লেখক বিদ্যাসাগরকে সহজ পাঠের লেখক বলে দাবি করতেন না।
ফিরহাদ হাকিমের মতে, সিপিএমের হাত থেকে বাংলাকে মুক্ত করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। এদিকে দেশ ফের পরাধীন হতে চলেছে। এই বিজেপি সাম্রাজ্যবাদকে ফের ডেকে নিয়ে আসছে। কেন্দ্রের মোদি সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দেশকে বিক্রি করে দিয়েছে। তাঁর মতে, যতই হিন্দু-মুসলমানের কথা তোলা হোক না কেন, এখন লড়াইটা দেশরক্ষার লড়াই। তিনি বলেন, আচ্ছে দিন আসবে না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ভারতকে বিক্রি করে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি শেষ হয়ে গিয়েছে। বাংলাকে মধ্যপ্রদেশ গুজরাতের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
এদিনের সভা শুরু হয়েছিল, জঙ্গলমহলের প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদাকে দিয়ে। সাঁওতালি ভাষার পাশাপাশি বাংলাতেও বলেন তিনি। এবারের লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলের আসনে বিজেপির কাছে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। সুকুমারবাবুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের সাক্ষী রয়েছে জঙ্গলমাহলের মানুষ। তারা মমতার পাশে ছিল, আছে, থাকবে। কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা রাজ্যবাসীর সামাজিক ও আর্থিক উন্নয়নে তৃণমূল সরকারের ভূমিকা মনে করিয়ে দেন। তফসিলি জাতি, উপজাতিদের শংসাপত্র জোগাড় করা এই আমলে সহজ ও স্বচ্ছ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দার্জিলিংয়ের পাহাড়বাসীর প্রতিনিধি হিসেবে বিনয় তামাং গোর্খালি ভাষায় বক্তব্য পেশ করেন। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এনআরসি নিয়ে পদক্ষেপে পাহাড়ের মানুষও আতঙ্কে রয়েছে।