বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
চলতি বছরের গোড়ায় রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকার তাজপুর নিয়ে টালবাহনা করায় ওই বন্দরটি রাজ্য তৈরি করবে। কেওপিটি’র এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, তাজপুরের বন্দরটি রাজ্য সরকার একাই করবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত এখনও কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হয়নি। তাই প্রকল্পটি নিয়ে তাঁরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে তাজপুরে বন্দর তৈরির কথা। এই প্রকল্পে কেন্দ্রের ৭৪ শতাংশ ও রাজ্য সরকারের ২৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব থাকবে বলে ঠিক হয়েছিল। সাগরদ্বীপে যে গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, তাতেও এই অংশীদারিত্ব থাকার কথা ছিল। সাগর বন্দরের জন্য ‘ভোরসাগর’ নামে যৌথ উদ্যোগের একটি সংস্থা গঠিত হয়। তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কেওপিটি’র ৭৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব থাকত। ভোরসাগর সংস্থাটির মাধ্যমে তাজপুর বন্দর তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সাগর বন্দর প্রকল্পটি স্থগিত রেখে তাজপুর নিয়ে এগনোর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল রাজ্য সরকার। তার আগে রাজ্য সরকার নিজ উদ্যোগে তাজপুর বন্দর তৈরির উদ্যোগ নেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে শর্ত দেন, তাজপুরে যৌথ উদ্যোগে বন্দর করা হলে সাগরদ্বীপকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে মুড়িগঙ্গার উপর একটি সেতু তৈরি করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। কিন্তু সাগর বন্দর প্রকল্পটি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর সেতু নির্মাণে তৎপরতা আর দেখা যাচ্ছে না। লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী সাগরে গিয়ে জানিয়ে দেন, কেন্দ্র করছে না, তাই সাগরের সংযোগকারী সেতু তাঁরাই করবেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কনসালট্যান্ট সংস্থা তাজপুরের যে ফিজিবিলিটি রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে সমুদ্রের উপর ৪, ৭, ১২ কিমি দীর্ঘ ডাইক তৈরি করার প্রস্তাব দিয়েছে। চার কিমি ডাইক নির্মাণ করা হলে সমুদ্রে নিয়মিত ড্রেজিং করে জাহাজ চলাচলের উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। খুব বড় জাহাজ ড্রেজিং করলেও আসতে পারবে না। ড্রেজিংয়ে বিপুল খরচ হবে। ৭ কিমি দীর্ঘ ডাইক হলে বন্দরে ১২ মিটারের আশপাশে গভীরতা মিলবে। এতে বড় জোর ৭০-৮০ হাজার টন পণ্যবাহী প্যানাম্যাক্স ধরনের জাহাজ আসতে পারবে। কিন্তু এক লক্ষ টনের বেশি পণ্য বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যাপসাইজ জাহাজ তাজপুরে আনতে গেলে জলের গভীরতা ২০ মিটার থাকা প্রয়োজন। তার জন্য ১২ কিমি দীর্ঘ ডাইক করতে হবে। এই ধরনের জাহাজ আনতে না পারলে প্রকৃত গভীর সমুদ্র বন্দর বলতে যা বোঝায়, তা হবে না।
ডাইক রয়েছে এমন বন্দর দেশে এখন একটিও নেই। চীনে প্রায় ৭ কিমি দীর্ঘ ডাইক তৈরি করে একটি বন্দর চালু করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে একটি দ্বীপ আছে। ফলে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করতে হয়নি। তাজপুরে যে গভীরতায় বন্দর করা হোক না কেন, সমুদ্রের বালি-মাটি ফেলে কৃত্রিম দ্বীপ করতেই হবে বার্থ তৈরির জন্য। বার্থ থেকে স্থলভূমির সংযোগ রক্ষা হবে ডাইকের মাধ্যমে। তার উপর রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে।