কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
কেন কলকাতার পড়ুয়ারা সাইকেল পাবে না, তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছিল। আট বছর ধরে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যাওয়ার জন্য সাইকেল পেয়েছে। কলকাতার ক্ষেত্রে এনিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও পৃথক পরিকল্পনা করা হয়নি। কিন্তু এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা পরিষ্কার, এবার কলকাতার স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই বিষয়ে সুখবর আসতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, সবুজসাথী প্রকল্পে গ্রামের ছেলেমেয়েদের সাইকেল দেওয়া হয়েছে। এখানে তো ট্রাফিক আইন আছে। সাইকেল চালানো যাবে না। তাই কলকাতার পড়ুয়াদের জন্য সাইকেলের বদলে অন্য কিছু করা যায় কি না, তা দেখছি। দার্জিলিংয়ের উদহারণ টেনে তাঁর দাবি, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি বলে সেখানকার পড়ুয়াদের বর্ষাতি দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডার জন্য শীতবস্ত্র দেওয়া হয় পাহাড়ের পড়ুয়াদের। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পর সেই রকমই কিছু এখানে দেওয়া হবে বলে জল্পনা শুরু হয়।
এদিকে, স্কুলে পড়াশোনার মান ভালো যাতে হয়, তার উপর জোর দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কম্পিউটার, স্মার্টক্লাস করতে যেমন হবে, তেমনই মূল্যবোধের ক্লাসও করা উচিত। ভালো জিনিস মাথায় চাষ করা হলে, তার সুফল মিলবে। হিংসা বা নেতিবাচক চিন্তাভাবনা নয়, ইতিবাচক চিন্তাভাবনা দরকার। উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে এই মূল্যবোধের উপর অধ্যায় রয়েছে। মূল্যবোধের ক্লাসের পাশাপাশি, রাজ্যে পড়াশোনার যে সুযোগ-সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে, তার উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে ডিগ্রি পাওয়ার একটা ঝোঁক থাকেই। কিন্তু ঘরের কাছেও অনেক সুযোগ আছে। এরপর গত আট বছরে রাজ্যে কত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বেলতলা গার্লস হাইস্কুলের জন্য কল্পতরু হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। এই স্কুলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করলেন তিনি। কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ হচ্ছে, তার হিসেব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্কুলের দু’টি ভবনের ৯০ বছর বয়স। তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা, চারটি ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য ২০ লক্ষ, হস্টেল সংস্কার করতে ২০ লক্ষ, স্কুলের মিউজিয়াম ঢেলে সাজতে আরও ১০ লক্ষ, আসবাবপত্র, গ্রন্থাগারের বই, ২০টি কম্পিউটার এবং সিসিটিভি কিনতে ২০ লক্ষ, স্কুলের পাঁচিল তৈরি করতেও ১৫ লক্ষ এবং স্কুলের মুক্ত থিয়েটার সংস্কার করার জন্য দেওয়া হবে পাঁচ লক্ষ। টাকা বরাদ্দের পাশাপাশি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম ২০২০ সালের মধ্যে চালু করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়টি শিক্ষা দপ্তর আলাদা করে দেখবে।
মুক্তহাতে স্কুলের জন্য বিপুল অঙ্কের টাকা বরাদ্দ করা ছাড়াও এই স্কুল যদি তাদের আরেকটি ক্যাম্পাস তৈরি করতে চায়, তার জন্যও সরকার জমি দিতে রাজি। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, সেই জমি অবশ্য নিউটাউনে হবে, কারণ কলকাতায় ফাঁকা জমি পাওয়া কঠিন। ১০০ বছরে পদার্পণ করা এই স্কুলের প্রতি তাই মমতার আহ্বন, আমি চাই আপনারা একটি কলেজ করুন।