গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
কলকাতার কোনও সরকারি পলিটেকনিক কলেজে ইউনিফর্ম নেই। কিন্তু ব্যতিক্রম বিআইটি। আকাশি রংয়ের ফুলহাতা জামা এবং কালো ফুলপ্যান্ট ইউনিফর্ম হিসেবে পরতে হবে, তা একটি অর্ডার হিসেবে কলেজ বের করেছে। কিন্তু তাতে কারও স্বাক্ষর নেই। অভিযোগ, ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির পরই সিনিয়রদের একাংশ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কোন দোকান থেকে তা বানাতে হবে। ৩৩০০-৩৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ব্লেজার এবং টাইও গছিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বহু গরিব ছাত্রছাত্রী টিউশন ফি ওয়েভার (টিএফডব্লু) অর্থাৎ, ফি মকুবের সুবিধা নিয়ে পড়তে আসেন। তাঁদের কাছে ইউনিফর্মের জন্য এত টাকা খরচ স্রেফ বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়। কিন্তু কান্নাকাটি করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। পোশাক আবশ্যিকভাবেই কিনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কোনও রাখঢাক নেই অধ্যক্ষ অমিতরঞ্জন ঘটকের। তিনি বলেন, কলেজে যা খুশি তাই পরে আসা যায় নাকি! অনেক কলেজেই আছে। শিলিগুড়িতে খোঁজ নিন। এরপর কিছু প্রশ্ন করার আগেই তিনি বলেন, যে কোনও দোকান থেকে পোশাক তৈরি করে আনা যাবে। কোনও ছাত্র বাড়ির কাছে কোনও দোকান থেকেও বানাতে পারেন। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট কোনও দোকান থেকেই পোশাক বানানোর অঘোষিত ফতোয়া রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন করারই সুযোগ দেননি প্রতিবেদককে। এটাও ঠিক, এই কলেজে বেশ কয়েক বছর ধরেই ইউনিফর্ম রয়েছে। কিন্তু স্রেফ মেধার জোরে সুযোগ পাওয়া গরিব পড়ুয়াদের মধ্যে অসন্তোষও রয়েছে ঠিক ততদিন ধরেই।
এই পোশাকবিধি রেখে দেওয়ার ব্যাপারে বেশ গুছিয়েই নেমেছে ছাত্রনেতাদের একাংশ। কয়েক বছর ধরে ইউনিফর্মের রং ছিল হাল্কা গোলাপি শার্ট এবং কালো প্যান্ট। এবার সেটা স্ট্রাইপ দেওয়া আকাশি শার্ট করার কথা ওঠে। ছাত্রছাত্রীদের একাংশের কাছে সই করিয়ে একটি চিঠি অধ্যক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়। যাতে আগের ইউনিফর্মই রেখে দেওয়ার দাবি তোলা হয়। তা সম্ভব না হলে অন্তত স্ট্রাইপ যাতে তুলে দেওয়া হয় সেই আবেদনও করা হয়েছে। তাহলে যে কোনও দর্জির কাছে সেই শার্ট বানিয়ে নেওয়া যাবে। একইসঙ্গে কলেজের লোগো দেওয়া টাইয়ের দাবিও রাখা হয়েছে।
অন্দরের খবর, এটাও চোখে ধুলো দেওয়ার ব্যাপার। এই চিঠিতে আসলে ইউনিফর্মের দাবি যে রয়েছে, তা বোঝানোর জন্যই কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করতে পারবে। এই দাবিকে সামান্য মান্যতা দিয়ে আকাশি রংয়ের শার্ট থেকে স্ট্রাইপটি তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পোশাকবিধি চালুই রয়েছে। অধ্যক্ষকে চিঠি দেওয়া এক ছাত্র অভিষেক ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের কোনও ইউনিয়ন নেই। ছাত্রদের তরফেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পোশাক থাকছে। কোনও সমস্যা নেই। জানা গিয়েছে, একইভাবে পোশাকবিধি চালু রয়েছে কাঁচড়াপাড়ার গয়েশপুর সরকারি পলিটেকনিক কলেজেও। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে অধ্যক্ষ অরবিন্দ মণ্ডল বলেন, আমাদের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কথা বলতে পারি কি না, তা জেনে নিয়ে ফোন করছি। সেই ফোন অবশ্য আর আসেনি।