বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ঘড়িতে তখন প্রায় সওয়া ১টা। বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল করে লালবাজারের দিকে এগতে শুরু করেন। প্ররোচনা ছাড়াই হঠাৎ করেই মিছিলের দিক থেকে পুলিসকে লক্ষ্য করে দুটি পাথর উড়ে আসে। আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি পুলিস। জলকামান চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করা হয় মিছিলের অগ্রভাগকে। তখনও কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ নবনির্বাচিত এমপিরা এবং বিজেপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ফিয়ার্স লেন থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে। জলকামানের পাশাপাশি পুলিস পরপর ১০-১২ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস চার্জ করে। ফলে কার্যত শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যায় বিজেপির লালবাজার অভিযান।
লোকসভা ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির এদিনের লালবাজার অভিযানে বেশ কিছু পরিবর্তন সকলের নজরে এসেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, অতীতের হিংসাত্মক আন্দোলনের বদলে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের এদিন অনেকটাই সংযত দেখিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতার গন্ধ পাওয়া বিজেপি কোনও ধংসাত্মক আন্দোলনে নাম জড়িয়ে জনমানসে নিজেদের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে নারাজ। পাশাপাশি পুলিস-প্রশাসনের মনোভাবেও লক্ষণীয় পরিবর্তন নজর কেড়েছে সকলের। অতীতে বিজেপির লালবাজার অভিযান মানেই লাঠি হাতে পুলিসকে যে আগ্রাসী মেজাজে দেখা যেত, এদিন তা অনেকটাই উধাও। লাঠিচার্জের পরিবর্তে জল কামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এভাবেই লালবাজার অভিযানকে কেন্দ্র করে কার্যত তিক্ততা এড়িয়েছে উভয়পক্ষই। বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিনের অভিযান চলাকালীন ছয় মহিলা কর্মী সহ বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পুলিসের নিচুতলার অভিযোগ, লালবাজার অভিযানে পুলিসকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা যত না কাঁদিয়েছে, তার থেকে টিয়ার গ্যাস অনেক বেশি কাঁদিয়ে ছেড়েছে। মধ্যপ্রদেশে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তৈরি এই টিয়ার গ্যাস ২০১৭ সালে বামেদের লালবাজার অভিযানে প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল।