উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
তিনি কার্যত হুঁশিয়ারিJ সুরেই বলেন, এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে হারতেই হবে। কারণ মানুষের সব ভোট আমাদের নেতা নরেন্দ্র মোদির ঝুলিতে যাবে। এটা দিদি মানুক বা না মানুক। তাই শেষ দফার আগে এসে মানুষের কাছে আমার আবেদন, এই তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করুন। এদিন অমিত শাহর সভায় জয়নগরের বিজেপি প্রার্থী অশোক কাণ্ডারী ছাড়াও জেলা বিজেপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। কীভাবে গোটা জেলাজুড়ে শাসকদল সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করেছে এবং বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তা তাঁরা সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে বিস্তারিত জানান।
এদিন নরেন্দ্র মোদির ভাষাতেই দিদিকে ‘স্পিড ব্রেকার’ বলে কটাক্ষ করে গেরুয়া শিবিরের এই অন্যতম সৈনিক বলেন, গোটা বাংলায় উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না, রাজ্যে উন্নয়ন হোক। তিনি মানুষের দাবি মেটাতে ব্যর্থ। উন্নয়নের কাজের বদলে এখানে গুলি-বন্দুকের কারখানা তৈরি হয়েছে। তাই এই সরকারকে মানুষ যে চাইছেন না, তা তৃণমূলের লোকজন বুঝে গিয়েছেন। সেজন্যই সন্ত্রাস তৈরি করছে। কিন্তু মানুষ এখন ভোট দিচ্ছেন। আর সেটাই আতঙ্ক তৃণমূলের। আগে যে বাংলায় একসময় চৈতন্য মহাপ্রভুর কীর্তন, রবীন্দ্র সংগীত শোনা যেত, এখন যায় না। সরস্বতী পুজো ও দুর্গাপুজোর অনুমতি মেলে না।
পাশাপাশি, এদিন রাজনৈতিক বক্তব্যের পাশাপাশি অমিত শাহ আবারও পুলওয়ামা হামলার পাল্টা বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানকে প্রচারে ঢাল করে বিরোধীদের কটাক্ষ করেন। বলেন, জঙ্গি হামলার পাল্টা আমাদের সেনারা যা করেছিলেন, তার জন্য সারা দেশে মিষ্টি বিলি হয়েছিল। হয়নি শুধু দু’জায়গায়। এক, পকিস্তানে এবং দ্বিতীয় , তৃণমূলের কার্যালয়ে।
মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথে বিজেপি কর্মীদের ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি এবং সেই ঘটনা ঘিরে পরবর্তীকালে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই বিষয়টিকেও নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন অমিত শাহ। বলেন, আমি এখান থেকে বলছি ‘জয় শ্রীরাম’। এবার গ্রেপ্তার করে দেখাক দিদির সরকার। তিনি ‘জয় শ্রীরাম’ বললে সব বিজেপি দর্শকরা সেই ধ্বনিতে ফেটে পড়েন। তারপরই তিনি কার্যত হুঁশিয়ারি সুরে বলেন, আমি এখান থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে কলকাতার রাজারহাটে সভা করতে যাচ্ছি। আমাকে আটকাক।
এরপরই তিনি বারাসতের বিজেপি প্রার্থী ডাঃ মৃণালকান্তি দেবনাথের সমর্থনে রাজারহাটের বিষ্ণুপুর-বটতলায় নির্বাচনীয় জনসভায় আসেন। সেখানে বারাসত কেন্দ্রের প্রার্থী ছাড়াও দমদমের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যও ছিলেন। সেখানেও তিনি একইভাবে তৃণমূল সুপ্রিমোর যাবতীয় অভিযোগ এবং রাজ্যজুড়ে অনুন্নয়নের কারণ হিসেবে কাঠগড়ায় তোলেন। তিনি দাবি করেন, ইউপিএ সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে পাঁচ বছরে ১ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের মোদি সরকার এই সরকারকে চার বছরে ৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা দিয়েছে। এই টাকা কি উন্নয়নের কাজে ব্যয় হয়েছে? এখানে মোদি সরকার উন্নয়ন করতে চায়। করতে দিচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের স্বার্থ দেখেন তিনি। সেকারণেই অনুপ্রবেশকারীদের রাজ্য থেকে বের করে দিচ্ছেন না। কারণ ভোটব্যাঙ্ক নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু আমি এটা স্পষ্ট করে বলতে চাই হিন্দু, খ্রিস্টান যারাই অত্যাচারিত হয়ে এ রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এক বার মোদির সরকার বানিয়ে দিন, এ রাজ্য থেকে অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে খুঁজে তাড়ানো হবে। একইভাবে ইসলামপুরে দাড়িভিট প্রসঙ্গ তুলেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দেন। বলেন, পড়ুয়ারা চেয়েছিল মাতৃভাষা বাংলার শিক্ষক। আর প্রশাসন দিয়েছে, উর্দুর শিক্ষক। বাংলায় বাংলা ভাষায় শিক্ষা হওয়া উচিত কি উচিত কি নয়? বিজেপি বাংলা ভাষাকে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠা করবে। এটাই প্রতিবাদ করায় দু’জন ছাত্রকে মমতার সরকার গুলি করে মেরেছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি, ২৩ মে তৃণমূলের মৃত্যুঘণ্টা বাজবে। আর যে পুলিসরা গুলি করেছিল, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।