বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, গরমে তেল-মশলার খাবার এড়িয়ে চলুন। ক’দিন পেটকে একটু বিশ্রাম দিলে ক্ষতি কী! বাচ্চাদেরও বাইরের খাবার খেতে দেবেন না। নেহাতই রসনাতৃপ্তির জন্য মন উচাটন করলে ঘরে তৈরি খাবার খান। ওদেরও তাই দিন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এখন ঘন ঘন পায়খানা বা ডায়ারিয়া বেশি হচ্ছে। অনেকের আবার পায়খানার সঙ্গে বমিও হচ্ছে। সংক্রমণজনিত কারণে হলে বহু ক্ষেত্রে জ্বরও চলে আসছে। এমনকী রোগীকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হচ্ছে। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দুটি কারণেই হচ্ছে। বেশি হচ্ছে ই-কোলাই, শিগেলা, সালমোনেল্লা, ক্যাম্পাইলো ব্যাকটার প্রভৃতি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে। মূলত দু’ধরনের ভাইরাসের জন্য সংক্রমণ হচ্ছে। সেগুলি হল রোটা ও অ্যাডিনো।
সোমবার ফুলবাগানের বি সি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষা ডাঃ মালা ভট্টাচার্য বলেন, সর্দি-গর্মির সমস্যাকে ছাপিয়ে গিয়েছে পেটের অসুখ। অসুস্থ হয়ে যত বাচ্চা হাসপাতালে আসছে, তার ৪০ শতাংশই পেটের সমস্যায় ভুগছে। ঘনঘন পায়খানা-বমি, সঙ্গে সংক্রমণের জন্য জ্বর চলে আসছে। মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণেই এইসব হচ্ছে। পইপই করে বাবা-মায়েদের বোঝাচ্ছি, ওরা যত জেদই করুক না কেন, বাইরের খাবার, বাইরের শরবত, ফাস্ট ফুড আর বাইরের ফলের রস—এই চারটি জিনিস ওদের খাওয়ানো যাবে না। স্বাদ বদল করতে চাইলে বাড়িতে বানিয়ে খাওয়ান। আর পরিস্থিতি সামলাতে পর্যাপ্ত জল এবং ওআরএস দিন।
বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, বমি, পায়খানা, পেটে সংক্রমণের জন্য জ্বর আসার পাশাপাশি বহু বাচ্চারই এ সময় পায়খানার সঙ্গে রক্তও চলে আসছে। ইনফেকশন থেকে জ্বর আসছে। আবার অনেক বাচ্চার ঘনঘন বমি-পায়খানার জন্য ডিহাইড্রেশন থেকেও জ্বর আসছে। খেয়াল করে দেখবেন, বেশ কিছু বাচ্চা এক-দু’বার বাথরুমে গেলেই কাহিল হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে সাত-আটবার গিয়েও খুব একটা নেতিয়ে পড়ছে না। পুরোটাই নির্ভর করছে বমি-পায়খানার পর তাকে কতটা জল খাইয়ে পরিস্থিতি সামলানো হচ্ছে, তার উপর। কারণ, বাড়িতে ঠিকমতো জল-ওআরএস খাওয়ানো হলে, সাধারণভাবে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না।
বিশিষ্ট গ্যাসট্রোএনটেরোলজিস্ট এবং পিজি হাসপাতালের হেপাটোলজি’র অধ্যাপক ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, এ সময় পেট ভালো রাখা এবং সুস্থ থাকার সবচেয়ে বড় দাওয়াই হল পর্যাপ্ত ও পরিশুদ্ধ জলপান। চেষ্টা করবেন চড়া রোদে না বের হতে। প্রবীণ ফিজিশিয়ান ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিশুদ্ধ জলপান এবং বাইরের খাবারের লোভ ত্যাগ করা—এ সময় সুস্থ থাকার জন্য জরুরি।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ও শিক্ষার জাতীয় প্রতিষ্ঠান সল্টলেকের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হোমিওপ্যাথি (এনআইএইচ)–এর অধিকর্তা ডাঃ অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বারবার পেট খারাপ হলে ব্রায়োনিয়া ৩০/২০০ তিন থেকে চারটে দানা দিনে তিনবার বা তরল ওষুধ হলে এক ফোঁটা করে দিনে তিনবার দু’দিন খেতে হবে। হঠাৎ বৃষ্টির পর পেট খারাপ হলে ন্যাট্রাম সালফ বা ডালকামারা, সঙ্গে গ্যাস থাকলে কার্বোভেজ, তেল-ঝাল-মশলা খেয়ে পেট খারাপে নাক্স ভোমিকা, বিয়ে বা অনুষ্ঠান বাড়িতে খেয়ে পেটের অসুখ হলে পালসেটিলা, সঙ্গে বমি হলে নাক্স ভোমিকা বা ইপিকাক, আইসক্রিম খেয়ে বমি হলে ও প্রচণ্ড জলপিপাসা থাকলে আর্সেনিক এবং পেট খারাপের সঙ্গে বমি হলে আর্সেনিক অ্যালবাম এবং সঙ্গে কুপরাম মেটালিকাম দিনে তিনবার খাওয়া যেতে পারে।