বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
আচমকা এতটা দাম বাড়ার কারণ কী? মুরগি চাষিদের একাংশের বক্তব্য, ওড়িশায় পর্যাপ্ত মুরগি চাষ হয়। ঘূর্ণিঝড় ফণীর তাণ্ডব সেরাজ্যের মুরগির চাষ একপ্রকার ধ্বংস করে দিয়েছে। লোপাট হয়েছে মুরগির ভাঁড়ার, দাবি চাষিদের একাংশের। ঝড়ে বেশিরভাগ খামার নষ্ট হওয়ায়, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া সহ সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলি থেকে মুরগি পাশের রাজ্যে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। তাতে এখানে জোগানে টান পড়ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রোগ ‘রানিক্ষেত’। এটি মূলত ভাইরাস ঘটিত রোগ, যা মুরগির জন্য ভয়ঙ্কর। রোগটি মানুষের শরীরে কোনও ক্ষতি না করলেও, ব্যবসা চৌপাট করে দেওয়ার জন্য এর অবদান অনস্বীকার্য, বলেন চাষিরা। তার থাবাও ওড়িশায় পড়েছিল, এমনটাই জানা যাচ্ছে। সেই প্রভাব ইতিমধ্যেই বাংলার খামারগুলির একাংশে প্রভাব ফেলেছে, এমনটাই জানা গিয়েছে। মুরগির মৃত্যুতে মাংসের জোগানে টান পড়ছে। তার প্রভাব পড়ছে বাজারে।
এর পাশাপাশি আসরে নেমেছে একটি বহুজাতিক সংস্থাও, অভিযোগ চাষিদের। ওই সংস্থা মুরগির যে ছানা বিক্রি করে, তার উপরই অধিকাংশ চাষির ব্যবসা নির্ভরশীল। বাজারে জোগানে টান রাখতে ওই সংস্থাটি মাসখানেক আগে টানা এক সপ্তাহ ডিম না ফুটিয়ে, তা নষ্ট করেছে বলেই অভিযোগ। তার ফলে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি হয়েছে বাজারে। এমনকী যে মুরগি ৭২ সপ্তাহ পর্যন্ত ডিম দেয়, তাদের ৬৮ সপ্তাহের মাথায় মেরে ফেলেও ডিমের ঘাটতি জিইয়ে রেখে, বাজারে জোগানের কৃত্রিম অভাব তৈরি করে রাখা তাদের পুরনো রেওয়াজ, বলছেন চাষিরা।
যদিও এই যুক্তিগুলিকে আমল দিতে নারাজ ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশন। এর সম্পাদক মদনমোহন মাইতির কথায়, এই সমস্যাগুলির চেয়ে এখন অনেক বেশি সমস্যা মুরগির খাবারের জোগান। তাঁর কথায়, দক্ষিণ ভারতের ভুট্টা চাষ এবার চৌপাট হওয়ায় গোটা দেশেই মুরগির ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে যেটুকু উৎপাদন হয়েছে, তা চাহিদার তুলনায় কিছুই নয়। তার দাম বেড়ে গিয়েছে ৬০ শতাংশ। কেন্দ্রীয় সরকার সব রাজ্যের থেকে ভুট্টার চাহিদা জানতে চেয়েছে এবং সেই মতো ১০ লক্ষ টন ভুট্টা আমদানি করার কথা এমএমটিসি লিমিটেডের। কিন্তু তা আসতে এখনও সময় লাগবে, বলছে কেন্দ্র, দাবি মদনমোহনবাবুর। তাঁর কথায়, এখন মুরগির মুখে খাবার জোগাতে ভাঙা চালই ভরসা। ১০ থেকে ১২ টাকায় যে ভাঙা চাল পাওয়া যাচ্ছিল, তার দর ২০ টাকা ছাড়িয়েছে। তাতে খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনই মুরগি তাগড়াই হচ্ছে না, বলছেন মদনমোহনবাবু। তাঁর কথায়, ১২ লক্ষ টন খাবার আমদানি করলে, তবে বাঁচবে ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু আপাতত সরকার অন্তত এক লাখ টন ভুট্টা এনে পরিস্থিতি সামাল দিক। নাহলে পরিস্থিতি আরও সঙ্কটময় হওয়ার আশঙ্কা তাঁর।