উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এ ধরনের প্রচণ্ড গরমে হিট ক্র্যাম্প, হিট এগজরশন ও হিট স্ট্রোক— তিনটি হওয়ারই আশঙ্কা রয়েছে। প্রথমটির ক্ষেত্রে তাও বা তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা পরিবেশে গিয়ে, নুন চিনি’র জল বা ওআরএস খেয়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামলানো যায়। কিন্তু, বাকি দুটি সমস্যায় কালবিলম্ব না করে হাসপাতালে যেতে হবে। এছাড়াও প্রেশার কমে যাওয়া, ডিহাইড্রেশন বা শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ জল বেরিয়ে যাওয়ার সমস্যাতেও চিকিৎসক বা নিকটবর্তী হাসপাতালে গিয়ে পরামর্শ নেওয়া উচিত।
রবিবার এ প্রসঙ্গে পিজি হাসপাতালের মেডিসিনের প্রধান ডাঃ সৌমিত্র ঘোষ বলেন, চড়া রোদ ও তাপপ্রবাহের প্রভাবে মূলত তিন ধরনের ইমার্জেন্সি সমস্যা হতে পারে। গুরুত্ব এবং শারীরবৃত্তীয় অবস্থার বিচারে ধাপগুলি হল হিট ক্র্যাম্প, হিট এগজরশন ও হিট স্ট্রোক। ডাঃ ঘোষের মতে, প্রচণ্ড তাপে শরীরে জলের অভাব হলে যে ক্ষতিকর প্রভাবগুলি পড়তে শুরু করে, হিট ক্র্যাম্প হল তার প্রথম ধাপ। সমস্যাটির নামের মধ্যেই রয়েছে লক্ষণগুলি। গা-হাতে-পায়ে ব্যথা বা ক্র্যাম্প। অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জায়গায় গিয়ে, পর্যাপ্ত জল খেয়ে এই সমস্যার কিছুটা মোকাবিলা করা সম্ভব। তবে কখনও এমন ক্ষেত্রে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়। হিট এগজরশনে শরীর থেকে জল বেরিয়ে যাওয়ায় আক্রান্তদের আচ্ছন্ন লাগতে শুরু করে। মাথা ঘোরে। তীব্র অস্বস্তি শুরু হয়। লক্ষ্য রাখবেন, এটি কিন্তু বড়সড় বিপদের পূর্বাভাস। অনেক সময়ই এই সমস্যা দেখা দিলে, হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ও স্যালাইন দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে হয়।
সৌমিত্রবাবু বলেন, মানব মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে শরীরের নিজস্ব থার্মোস্ট্যাট রয়েছে। এই অংশটিই তাপমাত্রা বাড়া-কমার সঙ্গে মানুষকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। চড়া রোদে ঘাম বের করে ‘কুলিং’ বা শরীর ঠান্ডা করে এই নিজস্ব থার্মোস্ট্যাটই। হিট স্ট্রোকে এই ব্যবস্থাটি আর কাজ করে না। অনেকসময় রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়। প্রচণ্ড গরম হয়ে যায় শরীর। মুহূর্তের দেরি না করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ইমার্জেন্সিতে নিতে যেতে হবে। ডাক্তারবাবুরা তখন ‘চিলিং’ (বরফ দিয়ে শরীর ঠান্ডা করা) ও কিছু জরুরি ব্যবস্থা নিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তুলবেন।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের প্রধান ডাঃ অপূর্ব মুখোপাধ্যায় আরও দুটি ইমার্জেন্সি সমস্যার কথা বললেন। একটি হল প্রেশার কমে যাওয়া এবং দ্বিতীয়টি ডি-হাইড্রেশন বা শরীরে জলের অত্যধিক অভাব। অপূর্ববাবু বলেন, ডি-হাইড্রেশন-এর ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জল খেতে হবে। ওআরএস বা নুন-চিনির জলও এক্ষেত্রে কাজে আসবে। তবে সুগারের রোগীরা কোনওভাবেই নুন-চিনির জল বা ওআরএস খাবেন না। তাঁরা এ ধরনের সমস্যায় নুন, পাতিলেবু এবং সুগার-ফ্রি জলে গুলে খেতে পারেন। অপূর্ববাবু বলেন, এছাড়া চড়া রোদে ঘোরাঘুরি করে অনেকের প্রেশার ফল করতে পারে। প্রশ্ন হল, কীভাবে বুঝবেন প্রেশার ফল করেছে? এক, মাথা ঘোরা এবং প্রস্রাব খুব কমে যাওয়া বা একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া অন্যতম লক্ষণ। দ্রুত এর সংশোধন না করলে বড় বিপদ হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসক বা নিকটবর্তী হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করিয়ে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করাতে হতে পারে।