বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ান মেডিসিন (সিসিআইএম)-এর নির্ধারিত সূচি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানটি বিএএমএস পাঠ্যক্রম চালু করেছিল। স্নাতকস্তরের এই ডিগ্রি কলেজে ছাত্র ভর্তির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রকের আয়ূশ বিভাগেরও নিয়মিত অনুমোদন লাগে। সেইমতো ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে তার পথচলা শুরু। মামলার বয়ান অনুযায়ী, বিতর্কের শুরু ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট। ওই তারিখে আয়ূশ বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি সিসিআইএম-এর সুপারিশ এবং ইন্সপেকশন রিপোর্ট কলেজকে পাঠায়। ১৪ আগস্ট কলেজ তার জবাবে তাঁকে জানায়, যেসব খামতি ছিল, তা ঠিক করে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, ২০১৮ সালেরই ২৬ সেপ্টেম্বর আয়ূশ বিভাগ জানিয়ে দেয়, এবার আর তাদের ছাত্র ভর্তির অনুমোদন দেওয়া যাচ্ছে না। এই বার্তা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়। কিন্তু, ১৩ নভেম্বর একক বিচারপতি সেই মামলা খারিজ করে দেন। বিপাকে পড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই সূত্রে ডিভিশন বেঞ্চে যায়।
কলেজের তরফে এই মামলার শুনানিতে বলা হয়, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে শর্তাধীন ছাত্র ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই। পরিকাঠামোগত যাবতীয় খামতি ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধন করে নেওয়ার শর্তে। খামতি পূরণ হল কি না, তা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য অনুমোদন দেওয়ার সময় দেখা হবে বলে জানানো হয়েছিল। দাবি করা হয়, পরবর্তী বছরগুলিতে এভাবেই শর্ত প্রদান ও অনুমোদন বরাদ্দ হয়ে এসেছে। এবারও নোটিস পাওয়ার পরে যাবতীয় খামতি পূরণ করা সত্ত্বেও সেই অনুমোদন দেওয়া হল না। তাই সংশ্লিষ্ট সরকারি সিদ্ধান্তকে বেআইনি ঘোষণা করা হোক।
জবাবে মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, এমন প্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামো, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণদান ব্যবস্থা সিসিআইএম বিধি অনুযায়ী থাকা বাধ্যতামূলক। সেই মতো ২০১৮-১৯ সালে ছাত্র ভর্তির জন্য ন্যূনতম ব্যবস্থা ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যকর করতে হতো। যা করা হয়নি। কিন্তু, কী ছিল সেখানকার খামতি? আদালতকে বলা হয়, কলেজের অন্তত তিনটি শিক্ষা বিভাগে ‘হায়ার ফ্যাকাল্টি’ নেই। যেখানে অন্তত একজন করে তা থাকা উচিত। কায়া চিকিৎসা বিভাগে ন্যূনতম দু’জন থাকার কথা হলেও ‘হায়ার ফ্যাকাল্টি’ রয়েছেন এক জন। ওয়েব ভিত্তিক ‘কম্পিউটারাইজড সেন্ট্রাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’ কলেজে নেই। এমনকী আরএমএস অনুযায়ী এক্স-রে, ইসিজি এবং ইউএসজি ব্যবস্থাও নেই। কলেজের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, হাসপাতাল কর্মী এবং পিজি শিক্ষার্থীদের জন্য আধার ভিত্তিক বায়োমেট্রিক হাজিরা ব্যবস্থাও কার্যকর নেই। আরও জানানো হয়, ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট এই প্রসঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শোনা হয়েছিল। তার জেরে কলেজের উত্তর থেকে স্পষ্ট যে, তারা ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওইসব খামতি দূর করেনি। তাই সঙ্গত কারণেই তাদের ওই অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
সব কিছু খতিয়ে দেখে বেঞ্চ তার রায়ে বলেছে, মামলাকারী নিজেই মেনে নিয়েছে যে, কারণ দর্শানোর নোটিস পাওয়ার পর কলেজ তাদের খামতি পূরণ করেছে। বিধি অনুযাগী নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নয়। তাই মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত সঠিক। তবে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ভর্তির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ মনে করলে নতুন করে আবেদন করতেই পারে।