বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়শই দাবি করেন, রাজ্যে তৃণমূলের বিরোধিতায় বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। উল্লেখ্য, তিনটি জেলা ছাড়া কংগ্রেসের তেমন কোনও সাংগঠনিক অস্তিত্ব নেই। কিন্তু কলকাতায় দুটি কেন্দ্রে বাম ও কংগ্রেসের মিলিত শক্তি যদি শিবির বদল করে বিজেপির পাল্লায় ঝোঁকে, তাহলে সব হিসেব উল্টে যেতে পারে। তৃণমূল বিরোধিতা করতে গিয়ে এই বাম কৌশল তাদের ভোট ব্যাঙ্কে ধস নামাতে পারে। প্রাথমিকভাবে মমতার ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও সপ্তদশ লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় এসে সিপিএমের জেলা নেতাদের একাংশ বেশ চাপে পড়েছেন। ভোটের ফলাফল বের হওয়ার পর রাজ্যে যেটুকু তাদের রাজনৈতিক জমি রয়েছে, সেটুকুও হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দানা বেধেঁছে বাম মহলে। ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের সম্ভাব্য বোঝাপড়া নিয়ে সরব হচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। এই ক্ষেত্রে তাদের হাতিয়ার হয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের একটি সাক্ষাৎকার। যেখানে দলের এই প্রবীণ নেতা তৃণমূলকে রোখার নামে সিপিএম যাতে বিজেপির হাত শক্ত না করে, সেই আর্জি রেখেছেন। বুদ্ধদেববাবু বলেছেন, তৃণমূলের ফুটন্ত কড়াই থেকে যেন বিজেপির আগুনে কমরেডরা না ঝাঁপ দেন।
দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি প্রধান বিপদ বললেও রাজ্যের ক্ষেত্রে বাংলার সিপিএমের ভিন্ন সুর নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট ছিল না। তাই হিন্দুত্বের বিরোধিতাকে এরাজ্যে সরিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন বাংলার কমরেডরা। এই পটভূমিতেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে ভোটের মরশুমে সিপিএমের কৌশলকে ঘিরে। বাম ও বিজেপির গোপন সখ্য সম্পর্কে নিশ্চিত কলকাতার মেয়র পারিষদ তথা তৃণমূল নেতা বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। একইভাবে উত্তরের নেতা আরেক মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দারও মনে করেন সিপিএমের তৃণমূল বিরোধিতা আসলে বিজেপির হাত শক্ত করবে। বৈশ্বানরের মতে, বুদ্ধদেববাবুর কথাতেই তো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এতদিন ধরে মমতাদি যে আশঙ্কার কথা বলে আসছিলেন, তা কতটা সঠিক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেই সেটা ধরা পড়েছে। সিপিএমের কলকাতা জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস রায় অবশ্য এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। উল্টে তাঁর দাবি, তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল আর দুর্নীতির ফলে নিজেদের ভোটই ধরে রাখতে পারবে না শাসকদল। নিজেদের সেই দুর্বলতা ঢাকতে আগেভাগেই সিপিএমের নামে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি নিশ্চিত, ভোটে জেতার সম্ভাবনা না থাকলেও নীতি নৈতিকতার উপর দাঁড়িয়ে বামেরা ভোট প্রচারে নেমেছে। তাই ২০১৬ সালের তুলনায় ভোট বাড়বে বই, কমবে না বলেই মনে করেন সিপিএমের এই জেলা নেতা।