বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
এদিন বারাসতের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কাকলি ঘোষদস্তিদারের সমর্থনে প্রথমে অশোকনগরের হরিপুরে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ভরদুপুরে সেখানেও ভিড় উপচে পড়েছিল। মমতা বলেন, হাওলায় এত টাকা এধার ওধার যাচ্ছে। দেখেও যাদের ধরা উচিত ছিল, তারা কেন ধরবে না? কালকেও আপনারা দেখেছেন, বিজেপির এক প্রার্থী কয়েক কোটি টাকা নিয়ে ধরা পড়েছে। সিআরপিএফ, সিআইএসএফ সব পাহারা দেয়। দিল্লি থেকে জেড প্লাস হচ্ছে। রাজ্যকে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন পড়ে না। কনসাল্টও করে না। পুলিসের গাড়িতে গাড়িতে জেড প্লাসের সুযোগ নিয়ে টাকার বাক্স যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে ওই বাক্স দুষ্কৃতীদের দিয়ে বলা হচ্ছে, তুমি ভোটটা দখল করো। আর গরিব মানুষকে একদিন-দু’দিনের জন্য একটু মদ-মাংস খাওয়াও।
মমতা বলেন, আমরা যখন হেলিকপ্টার থেকে নামি, তখন প্রেস, নির্বাচন অফিসার ছবি তুলতে পারে। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদি যে জায়গাগুলোতে নামছেন, সেখানে কোনও প্রেসকে ঢুকতে দেওয়া হয় না কেন? এমনকী, নির্বাচন কমিশনের ফটোগ্রাফারও ঢোকে না। একদিন বেরিয়ে গিয়েছিল ওখান থেকে বাক্স যাচ্ছে। এইরকম কত বাক্স, কত মন্ত্রী বিভিন্ন জায়গা থেকে বাংলায় বাক্স নিয়ে আসছেন। বাক্স দিয়ে বাংলায় নির্বাচন হবে না। দলীয় কর্মীদের তৃণমূল নেত্রী বলেন, আপনাদের রাত জেগে পাহারা দিতে হবে। তিনি বলেন, বিজেপি পার্টিকে জিজ্ঞাসা করুন, আগে তো খেতে পেতেন না, আজকে এত টাকা এল কোথা থেকে? নোট বাতিলের টাকা? জবাব দিতে হবে নোট বাতিল করে কত টাকা করেছেন?
মোদিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, কাউন্সিলার হওয়ার যোগ্যতা নেই, দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। অটলজির সঙ্গেও কাজ করেছি। এমন মিথ্যাবাদী প্রধানমন্ত্রী দেখিনি। আমরা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো লড়াই করি। আপনি তো ইঁদুর ছিলেন। সিংহ হয়েছেন। ২৩ মে’র পর আবার পুনর্মুষিক ভবঃ হয়ে যাবেন। আমার সঙ্গে মুখোমুখি বসুন। সব প্রশ্ন-উত্তর সামনা-সামনি দেব। আমাকে পুরীকে ঢুকতে বাধা দিয়েছে বিজেপি। শিকাগোয় যেতে দেয়নি। এই ইমারজেন্সি সরকার আর নয়।
অশোকনগরের সভা সেরে এদিন কামারহাটি রথতলা মোড় থেকে পৌনে ৫টা নাগাদ দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়ের সমর্থনে পদযাত্রা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে থেকেই ফিডার রোড ও এমবি রোডের দু’পাশে শুধু মানুষের ভিড়। আশপাশের ফ্ল্যাট, বাড়ির ছাদ এমনকী, পাঁচিলেও মানুষ উঠেছিলেন। কেউ ছবি তুলেছেন, নমস্কার করেছেন কিংবা দিদি বলে চিৎকার করেছেন। একজন বয়স্ক মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে জড়িয়েও ধরেন। বেলুনের ঝাঁক, দলীয় পতাকা, কাটআউটে সাজানো রাস্তাজুড়ে পুষ্পবৃষ্টি, উলু-শঙ্খধ্বনি বাজছিল। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে করমর্দন করতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। মুখ্যমন্ত্রী থেমে গিয়ে এক নিরাপত্তাকর্মীর পিঠ চাপড়ে বলেন, এইরকম করছেন কেন? মুখ্যমন্ত্রী ওই মহিলার কাছে যান। মহিলা আনন্দে তাঁকে জড়িয়েও ধরেন। এক যুবক ছবি তুলতে গেলে মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়িয়ে পড়েন। নিরাপত্তার বেড়া ডিঙিয়ে তিনি পা ছুঁয়ে প্রণামও করেন। পদযাত্রায় সৌগতবাবু, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সহ অনেকেই ছিলেন। তবে, প্রার্থী কিছুক্ষণ পর অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে হুডখোলা জিপে তোলা হয়। জনসুনামির ঢেউ সামাল দিতে পুলিসকেও হিমশিম খেতে হয়।