বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
সত্যজিৎ বিশ্বাসকে কেন খুন করা হল, তার উত্তর প্রথম থেকেই খুঁজছিলেন গোয়েন্দারা। এর পিছনে যে শত্রুতা রয়েছে, তা প্রথমেই বুঝে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কী সেই শত্রুতা, সেটাই খোঁজা হচ্ছিল। এক্ষেত্রে সুজিতই জেরায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। জেলা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সুজিত জেরায় জানিয়েছে, পলাতক অভিযুক্ত অভিজিৎ স্থানীয় একটি কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন করত। ভর্তি সংক্রান্ত বিষয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় সেই দেখভাল করত। যে সমস্ত পড়ুয়াদের নির্দিষ্ট নম্বর থাকত না, তাঁদের টাকার বিনিময়ে ভর্তি করিয়ে দিয়ে বিপুল টাকা তুলত সে। যার ভাগ নাকি রাজনৈতিক নেতারাও পেতেন। এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই বছর দুয়েক আগে বিধায়কের সঙ্গে তার ঝামেলা হয়। এরপর অভিজিৎকে ওই কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। তখন থেকেই বিধায়কের প্রতি ক্ষোভ জন্মায় তার। এরপরই সুজিতকে দলে নেয় সে। এলাকা থেকে সত্যজিৎবাবুকে সরিয়ে দিতে পারলে পুরোটাই তাদের দখলে চলে যাবে, এই ভেবে। পাশাপাশি পুলিসের কাছে সুজিতের এও দাবি, গোরু পাচারকারীদের বিভিন্ন রকম সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বখরার টাকার ভাগও এক সময় পেত অভিজিৎ। কিন্তু পরে তাও তার হাতছাড়া হয়ে যায়। একের পর এক টাকার জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই সে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরিকল্পনা করে, পথের কাঁটাকে যেভাবেই হোক সরাতে হবে।
এরপরই খুনের পরিকল্পনা করা হয়। সেই কারণে মাস ছয়েক আগে তারা আগ্নেয়াস্ত্র কেনে। নদীয়ার এক বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারির কাছ থেকে তা কেনা হয় ছয় হাজার টাকা দিয়ে। দু’জনের কাছেই ২৪ ঘণ্টা থাকত এই আগ্নেয়াস্ত্র। বিধায়কের গতিবিধির উপর নজর রাখত দু’জনেই। তিনি যে অনুষ্ঠান বা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেতেন, সেখানেই যেত এই দুই অভিযুক্ত। বিধায়ক কোথায় বসছেন, তাঁর সঙ্গে দেহরক্ষীরা কোথায় রয়েছেন, তার পুরোটাই নজরে রাখত তারা। তিনি বাড়ি থেকে বেরোনো মাত্র তাঁকে অনুসরণ করত দুই অভিযুক্ত। কিন্তু কিছুতেই সুযোগ পাচ্ছিল না। এর আগে দু’বার তারা লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি এসে গিয়েছিল। কিন্তু দলীয় লোকজন এসে পড়ায় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। কিন্তু দু’দিন আগে তারা ঠিক করে আসে, এবার যে বাধাই আসুক, সত্যজিৎকে তারা খুন করবেই। তাঁর দেহরক্ষীরা বাধা দিলে তাঁদেরও গুলি করে দেওয়া হবে। সেই মতো তারা ওইদিন মঞ্চের কাছে চলে যায়। সেখানেই অপেক্ষা করতে থাকে। সুজিতের বক্তব্য, তারা ভেবেছিল, দেহরক্ষী সঙ্গেই রয়েছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে, তাঁরা নেই। ফলে তাদের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। আচমকাই এরপর তারা সত্যজিৎকে গুলি করে চম্পট দেয়। সে ধরা পড়ে গেলেও এখন অধরা অভিজিৎ। সুজিতকে জেরা করেই তার হদিশ পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।