বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ঘটনা হল, বউবাজার থানার প্রিন্সেপ স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দা ছিলেন ব্যবসায়ী অনিল বর্মা। ১৯৮৮ সাল থেকে তাঁর নামে একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক রয়েছে। ২০০৮ সালে তাঁর বাসস্থান পরিবর্তন হয়। ১০/১ প্রিন্সেপ স্ট্রিট থেকে তিনি চলে যান গার্ডেনরিচ রোডের একটি ফ্ল্যাটে। সেইমতো লালবাজারের আর্মস অ্যাক্ট ডিপার্টমেন্টের (এএডি) ডেপুটি কমিশনারের কাছে বন্দুকের লাইসেন্সের রেকর্ডে তাঁর নয়া ঠিকানা যোগ করার আবেদন জানান। তার ভিত্তিতে সেই বছরের সেপ্টেম্বরে নয়া ঠিকানা অনুযায়ী বন্দুকের লাইসেন্সের ঠিকানাও পরিবর্তিত হয়। এরপর তিনি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিয়মমাফিক বন্দুকের লাইসেন্স রিনিউও করান।
এই পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। এর মধ্যেই লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় সমস্ত লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক জমা রাখার নির্দেশিকা জারি করে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেইতো ২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল বন্দুক জমা রাখেন অনিলবাবু। তার জন্য একটি স্বীকৃতিপত্রও পান তিনি। কিন্তু হঠাৎ একদিন জানতে পারেন, তাঁর নামের বন্দুকটি জমা পড়েনি! অতএব, তাঁর পুরনো ঠিকানায় হানা দিয়েছে এএডি। তিনি বুঝতে পারেন, কোথাও একটা ভুল হয়েছে। তাই, ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট পুলিসকে ফের চিঠি দিয়ে ঠিকানা পরিবর্তনের কথা জানান অনিলবাবু, এবং এএডির নথিতেও সংশ্লিষ্ট পরিবর্তনের আবেদন করেন।
কিন্তু হঠাৎই তিনি জানতে পারেন, কমিশনের নির্দেশ পালন করে বন্দুক জমা না-রাখার অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে বউবাজার থানা। সেই মামলার ভিত্তিতে চাজশিট দাখিল হয়েছে। এমনকী, ২০১৬ সালে অনিলবাবুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়। আকাশ থেকে পড়েন তিনি। এরপর ওই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালে ব্যাঙ্কশাল আদালতেরই দ্বারস্থ হন বৃদ্ধ। কিন্তু তাঁর আবেদন নাকচ হয়ে যায়।
এরপর বাধ্য হয়ে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কয়েক বছর শুনানির চলার পর সম্প্রতি বিচারপতি শম্পা দত্ত (পাল) ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া গোটা মামলাটিই খারিজ করে দিয়েছেন। এবং, এক বৃদ্ধকে দশবছর যাবৎ হেনস্তার জন্য দোষী অফিসারদের খুঁজে বের করতে কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দত্ত (পাল)।