রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
ছয় বছর বয়সেই উলুবেড়িয়া পুরসভার ২১ নং ওয়ার্ডের জগন্নাথপুর সাতমহলের বাসিন্দা বুলু ঘোষের ডান পা ট্রেনের চাকায় বাদ পড়ে। তারপর থেকেই একটা পা নিয়ে, ক্র্যাচে ভর দিয়ে তাঁর জীবন সংগ্রাম শুরু। কখনও ক্র্যাচে ভর করে, আবার কখনও সাইকেল চালিয়ে পড়াশোনা করে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ১৯৯৮ সাল থেকে জগৎপুর আনন্দভবন ডেফ অ্যান্ড ব্লাইন্ড স্কুলে রিডার হিসেবে কাজে যোগ দেন। এর পাশাপাশি সামাজিক কাজেও নিজেকে নিয়োজিত করেছেন বুলু ঘোষ। করোনার সময় প্রায় দুই বছর স্কুল বন্ধ থাকলেও রোজ স্কুলে গিয়েছেন তিনি। এমনকী স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রীদের বাড়িতে মিড ডে মিলের খাবারও পৌছে দিয়েছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে কর্মক্ষেত্রে এমন দক্ষতা দেখানোর জন্য এই বছর রাজ্য পুরস্কার পাচ্ছেন বুলু ঘোষ।
অন্যদিকে, উদয়নারায়ণপুরের খলতপুরের বাসিন্দা ইত্তেশামা খাতুনের বয়স যখন মাত্র চার, তখন অভিভাবকেরা লক্ষ্য করেন, সে পাঁচটা মেয়ের মতো স্বাভাবিক নয়। বাকশক্তি ও শ্রবণ সমস্যায় আক্রান্ত। সাত বছর বয়স থেকে তার বৌদ্ধিক বিকাশে ঘাটতি দেখা যায়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, ইত্তেশামা বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত। মাথায় একপ্রকার আকাশ ভেঙে পড়ে ইত্তেশামার অভিভাবকদের। ১২ বছর বয়সে মেয়েকে নিয়ে আসেন উলুবেড়িয়ার কাটিলার আশা ভবন সেন্টারে। এখানে থাকাকালীন পড়াশোনার পাশাপাশি ফুটবল খেলা শিখতে শুরু করে সে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতাতেও যোগ দেয়। দেখা যায়, যে মেয়েটি বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেই পায়ে বল পেলে সবাইকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। এই বছরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান প্রদেশের ডেট্রয়েট শহরে স্পেশাল অলিম্পিক ইউনিফায়েড ফুটবল কাপ- ২০২২ প্রতিযোগিতায় ভারতের মহিলা ফুটবল দলের গোলরক্ষক হিসেবে ইত্তেশামা অংশ নিয়েছিল। ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে সে। এই অসাধারণ দক্ষতার জন্য এই বছর রাজ্য পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে তাকে।