কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাসসম গল্প ‘আম আঁটির ভেঁপু’ বা আম আঁটির বাঁশির প্রচ্ছদ তৈরি করতে গিয়ে সত্যজিৎ রায় সিনেমা তৈরির কথা ভেবেছিলেন। এমনটাই চর্চিত, বাকিটা ইতিহাস। হুগলির ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টি ইতিহাস নয়, জলজ্যান্ত বর্তমান। তবে ইতিহাসের গাছপাথর নেই। অর্থাৎ কীভাবে, কবে আমের আঁটিকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যের পথ খুলে গেল, কেউ জানে না। হরিপালের বিনোদ দাস বা সঞ্জয় সাহারাও জানেন না। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট মরশুমে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তাঁরা গাছ গজানো আমের আঁটি সংগ্রহ করে বেড়ান। তাঁদের কেউ বংশ পরম্পরায় এই ব্যবসা করছেন, কেউ বা নতুন। ঠিক কী করেন তাঁরা? সর্বত্রই আম খেয়ে আঁটি ফেলে দেওয়াই দস্তুর। গ্রামের মানুষ স্বভাববশত তা বাড়ির কাছেই ফেলেন। আর সেখান থেকে প্রকৃতির নিয়মে আঁটি ফুটে বের হয় চারাগাছ। দক্ষ সংগ্রহকারীরা আঁটি দেখেই চিনতে পারেন, তা কোন আমের। তাঁরা গৃহস্থের বাড়ি থেকে সেই আঁটি সংগ্রহ করেন। না, মাগনায় নয়, রীতিমতো দাম দিয়ে কেনেন ওঁরা। গুটি আমের জন্য একটি গাছ ১০ পয়সা। ল্যাংড়া বা অন্য কোনও জাতের আম হলে ৫০ পয়সা পর্যন্ত দর মেলে। এরপরই শুরু হয় আসল কাজ। চারাগাছকে জাত অনুসারে পৃথক করে পরিচর্যা করা হয়। একটু বড় হলে তা পৌঁছে যায় গাছ ব্যবসায়ীদের কাছে। আর এই হাতবদলেই আঁটি সংগ্রাহকদের গাছ পিছু ৫০ থেকে ১০০ টাকা মিলে যায়।
বছরের পর পর এভাবেই আমের আঁটির ব্যবসা করে আসছেন বিনোদ দাস। তিনি বলেন, আগে বাবা করতেন। এখন আমি করি। ভালো জাতের গাছ হলে খুব ভালো দর মেলে। ফলে, পেশা অদ্ভুত হলেও আয়ের নিরিখে খোশ মেজাজেই আছেন আঁটি সংগ্রাহকরা। হিন্দিতে প্রবাদ আছে, আম কে আম গুটলিও কে দাম। অর্থাৎ আমের সঙ্গে আঁটিরও দর মেলে। প্রসঙ্গ অন্য হলেও বঙ্গভূমে এসে হিন্দি প্রবাদের মতো সত্য হয়ে ওঠা পেশাটি বিমূঢ়বিস্ময়ের।