বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বুধবার সকালে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা নোদাখালি। এই থানা এলাকার মোহনপুর গ্রামে একটি বাড়িতে আচমকা বিস্ফোরণ হলে তিনজনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে বাড়ির মালিকও রয়েছেন। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে পরপর তিনবার বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ওই তিনজনের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। উড়ে যায় বাড়ির কংক্রিটের ছাদও। জানা গিয়েছে, ওই বাড়িতেই প্রচুর বারুদ ও বিস্ফোরক মজুত করা ছিল। সেখানে বিনা লাইসেন্সেই চলত বাজি তৈরি।
ওই বাড়িতে সত্যিই কি বাজির মশলা মজুত ছিল, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির হাত রয়েছে, এই প্রশ্নেই দ্বিধাবিভক্ত মোহনপুর। অনেকেই বলছেন, শক্তিশালী বিস্ফোরক না থাকলে ভয়াবহতা এতটা হতো না। দূর-দূরান্তের গ্রাম থেকেও শোনা গিয়েছে বিস্ফোরণের আওয়াজ। আবার গ্রামবাসীদের একটি অংশ জোরের সঙ্গেই বাজির মশলার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের কথায়, এখানে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বহুদিন ধরেই বাজি তৈরি হতো। সম্ভবত বাজির সেই মশলাই বিস্ফোরণের মূল উৎস। তবে এদিন গ্রামবাসীদের কেউ কেউ মুখ খুললেও তাঁদের চোখেমুখে ছিল আতঙ্ক।
এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ফরেন্সিক দল ও বম্ব স্কোয়াডের সদস্যদের প্রাথমিক অনুমান, শব্দবাজির প্রচুর মশলা মজুত করা হয়েছিল এখানে। সেগুলি ড্রামে ভরেই রাখা হয়েছিল। তবে তার মধ্যে অন্য কোনও বিস্ফোরক ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ওই দলের এক সদস্য বলেন, আগুনের কোনও স্ফুলিঙ্গ কোনওভাবে বারুদের ভাণ্ডারে গিয়ে পড়েছিল, আর তা থেকেই এই বিপত্তি। এদিন তদন্তকারী দলের সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। জানার চেষ্টা করেন প্রকৃত ঘটনা। এখানে কী কী ধরনের বাজি তৈরি হতো, তাও জানতে চান তাঁরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অঞ্চলে এমন আরও বেআইনি বাজির কারখানা থাকলেও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই সব জায়গায় বাজির আরও মশলা মজুত থাকতে পারে। পুলিস প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই জেলা প্রশাসন, দমকল ও পরিবেশ দপ্তরের আধিকারিকরা ওই এলাকা যৌথ পরিদর্শন করবেন বলে জানা গিয়েছে। এই বিস্ফোরণ নিয়ে স্থানীয় স্তরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপি’র ডায়মন্ডহারবার সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুফল ঘাটু বলেন, কলকাতা পুরসভা ভোটের আগে এই বিস্ফোরণ বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এখানে তৈরি বোমাই কি পুরভোটে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছিল শাসকদল? এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন বজবজ ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বুচান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে বিজেপি। ফরেন্সিক দল জানিয়েছে, বাজির মশলা থেকেই এই বিস্ফোরণ হয়েছে।