বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রবিবার রাত বাড়তেই শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সোমবার দুপুর দুটো পর্যন্ত আলিপুরে ১৫৭ মিমি, সল্টলেকে ২১৪ মিমি, দমদমে ১৮৭ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং, ডায়মন্ডহারবার প্রভৃতি জায়গায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১০০ মিমি-র বেশি। টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কলকাতা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলিও। কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের কয়েকটি জায়গায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত ১৫০ মিমি বা তারও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ধাপা পাম্পিং স্টেশনে বেলা ২টো পর্যন্ত ১৯২ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। একই হাল পূর্ব মেদিনীপুরের। ভারি বৃষ্টির জেরে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ভগবানপুর ও পটাশপুরে। দেশপ্রাণ ব্লকের বেশ কিছু জায়গায় জল উঠে গিয়েছে বলে খবর। তবে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতে ঘূর্ণাবর্তের প্রভাব ছিল সামান্য।
পূর্বাভাস না থাকার কথা স্বীকার করেছেন আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস। জানিয়েছেন, ‘কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সোমবার যে এতটা বেশি বৃষ্টি হবে সেটা আগে বোঝা যায়নি।’ আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, আজ, মঙ্গলবার কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির মাত্রা কমবে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টি হতে পারে। আগামী শনিবার নাগাদ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ফের একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয়তা বেড়েছে নবান্নে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। দুই মেদিনীপুরে ইতিমধ্যেই অতিবৃষ্টি জনিত কারণে দেওয়াল ধসে ও জলে ডুবে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। জলবন্দি প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষ। ৫৭৭টি ত্রাণ শিবির চলছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, রবিবার ঘূর্ণাবর্তটির অবস্থান ছিল উত্তর ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে। তারপর উপকূল অতিক্রম করে এটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর চলে আসে। একইসঙ্গে অবস্থান বদল হয়েছিল মৌসুমি অক্ষরেখার। সোমবার দুপুরের বুলেটিন অনুযায়ী, সেটি গয়া, কলকাতা হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। গণেশবাবু জানিয়েছেন, ঘূর্ণাবর্ত এবং মৌসুমি অক্ষরেখা অনেকটা সময় ধরে কলকাতার উপর অবস্থান করেছিল। ফলে কলকাতা ও সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মেঘ জমা হয়। তার জন্য টানা বৃষ্টি। পরে ঘূর্ণাবর্তটি পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।