সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: বন্যার জলে উদয়নারায়ণপুরের ভবানীপুর বিধিচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবেছে। কোথাও কোমর পর্যন্ত, আবার কোথাও একগলা জল। তা দেখে আতঙ্কিত ছিলেন দক্ষিণ বিধিচন্দ্রপুর গ্রামের সরকারপাড়ার বাসিন্দা রফিক আলি মল্লিক। কারণ বাড়িতে সন্তানসম্ভবা ছোট মেয়ে জাহিরা খাতুন মল্লিক। বাড়ির চারিদিক যেভাবে জলবেষ্টিত, তাতে মেয়ের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে কীভাবে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন, সেই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছিল রফিক সাহেবের। আর এই আশঙ্কাটাই সত্যি হল মঙ্গলবার রাতে, শুরু হল মেয়ের প্রসব যন্ত্রনা। একগলা জল পেরিয়ে কীভাবে মেয়েকে চিকিৎসের কাছে নিয়ে যাবেন, সেই চিন্তায় তখন মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় রফিক সাহেবের। সেই সময়ে তাঁর আর এক মেয়ে পরামর্শ দিলেন, বাবা কোনও চিন্তা নেই। বিধায়ক দাদাকে ফোন কর। সেই অনুসারে তিনি ফোন করেন উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজাকে। ফোনেই বিধায়ক তাঁকে আশ্বস্ত করেন, কোনও চিন্তা নেই। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার লোকেরা আপনার বাড়ি পৌঁছে মেয়েকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন। এরপরে কয়েক মিনিটের মধ্যে নৌকা সহ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুখেন চন্দ্র ও সমিতির সদস্য চিরঞ্জিত মণ্ডল পৌঁছে যান রফিক সাহেবের বাড়িতে। জাহিরাকে নৌকায় তোলা হয়। কিছুটা দূর যাওয়ার পর বাইকে খানিকটা পথ নিয়ে গিয়ে, ফের নৌকায় চাপিয়ে বরদায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় জাহিরাকে। রাত ১১টা ৩০ নাগাদ জাহিরা এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে পরিবারের সকলে।
রফিক সাহেব জানান, সেপ্টেম্বর মাসে এই সন্তানের আসার কথা ছিল। সেইমতো মেয়ে আমার বাড়িতে ছিল। যদিও মঙ্গলবার রাতেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। জল পেরিয়ে কীভাবে মেয়েকে চিকিৎসের কাছে নিয়ে যাব, সেই চিন্তা হচ্ছিল। তবে বিধায়ক পাশে দাঁড়ানোয় বিপদ কেটে গিয়েছে। অন্যদিকে, বিধায়ক সমীর পাঁজা জানান, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব।