কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
করোনার প্রকোপে আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপট বদলে গিয়েছে গোটা পৃথিবীরই। মারণ ভাইরাসে শেষ ১৪ মাসে প্রায় ১৫ লক্ষ শিশু মা-বাবার মধ্যে কোনও একজনকে হারিয়েছে। ভারতে এই সংখ্যাটা ১ লক্ষ ২০ হাজারের মতো। চরম সঙ্কটে দিন কাটছে তাদের। এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে জাল ছড়িয়েছে শিশু পাচারকারীরা। দত্তক দেওয়ার নাম করে রাজ্যজুড়ে শিশু বিক্রির চক্র চলছে বলে অভিযোগ উঠছে। এপ্রসঙ্গে নারী, শিশু ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘নির্বাচনের সময় এমন কয়েকটি অভিযোগ কানে এসেছিল। সরকার গঠনের পর বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করা হয়। সাইবার ক্রাইম বিভাগ তদন্ত করে। দপ্তরও বিষয়টি খতিয়ে দেখে। দেখা যায়, অভিযোগের উৎস অন্য রাজ্যে। তবুও সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষকে আরও সচেতন থাকতে হবে। এভাবে শিশু দত্তক নেওয়া যায় না। এমন দেখলে সরাসরি পুলিস বা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’
সম্প্রতি সমাজকল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকরা লক্ষ করেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় শিশু দত্তক দিতে চেয়ে একাধিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কোনওটায় বলা হয়েছে, ‘চার দিনের শিশুকন্যার বাবা ও মা মারা গিয়েছে। অনাথ শিশুকে নতুন জীবন দিতে আপনারা এগিয়ে আসুন।’ কোথাও বলা হয়েছে, ‘সাত মাসের শিশুপুত্রের সকল আত্মীয়কে কেড়ে নিয়েছে করোনা। সহৃদয় মানুষ হিসেবে তার পাশে দাঁড়ানো উচিত। ওই শিশুপুত্রকে দত্তক নেওয়ার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’ ওইসব নম্বরে ফোন করলে প্রথমে দত্তক দেওয়ার কথা বলা হলেও, পরে বিপুল টাকা দাবি করা দেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতিকে ঢাল করে শিশু বিক্রির এই নতুন ছক সামনে এনেছে পাচারকারীরা। সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে দত্তক দেওয়ার নাম করে শিশু বিক্রির চক্র চলছে বলেও অভিযোগ। এমন একাধিক বিজ্ঞাপন দেখে সমাজকল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকরা আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
তবে শুধু আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বলেই আশঙ্কা আধিকারিকদের। তাই জেলায় জেলায় সর্বাত্মক প্রচারের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। জেলায় এক হাজার করে ফ্লেক্স ও পোস্টার, ১০ হাজার হ্যান্ডবিল তৈরি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত ভুয়ো খবরের ফাঁদে পড়বেন না। শিশুদের দত্তক গ্রহণ সংক্রান্ত কোনও পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় করবেন না। এটি বেআইনি। করোনা পরিস্থিতিতে শিশুকে দেখাশোনার কোনও সমস্যা হলে চাইল্ডলাইন ও পুলিসকে জানান। অবৈধভাবে দত্তক নেওয়া আইনবিরুদ্ধ। তাতে জেল ও জরিমানা হতে পারে।’
মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি ব্লক প্রশাসন ও পুলিসকে নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকও করেছেন সমাজকল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকরা। অভিযুক্তদের খোঁজ পেলেই কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেখানে।