বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গত কয়েকদিনের অতিবর্ষণে খানাকুলে দ্বারকেশ্বর, রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। গ্ৰাম বাঁচাতে মাটি ও বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ উঁচু করার কাজে নামেন নদী লাগোয়া গ্ৰামের বাসিন্দারা। শনিবার বিকেলে খানাকুল-১ ব্লকের কিশোরপুর-১ গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বন্দিপুরে দ্বারকেশ্বর নদের বাঁধ ভেঙে যায়। জলের তলায় চলে যায় বন্দিপুর, নিরঞ্জনবাটি, বামুনখানা, মহিষগোট, তালিত, বেড়াবেড়িয়ার মতো এলাকা। রাতের দিকে ধান্যঘোরীর করপাড়া ও ঠাকুরানিচকের কাছে রূপনারায়ণের বাঁধ ভেঙে যায়। এতেই ভেসে যায় খানাকুল-২ ব্লকের একের পর এক গ্ৰাম। রাজহাটি-১, রাজহাটি-২, মাড়োখানা, শাবলসিংহপুর, রামচন্দ্রপুরের সঙ্গে খানাকুল-১ ব্লকের চালতাপুর, অনন্তনগর, ঠাকুরানিচক ও নতিবপুর সম্পূর্ণভাবে জলের তলায় চলে যায়। বিপর্যয়ের মুখে পড়েন খানাকুল-১ ও ২ ব্লকের লক্ষাধিক মানুষ। বাড়ির ছাদে, উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে থাকেন গ্ৰামের বাসিন্দারা। জলমগ্ন গ্ৰামের বাসিন্দাদের উদ্ধারকাজে নামে জাতীয় বিপর্যয় বাহিনীর সঙ্গে মহকুমা প্রশাসন ও বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বিপর্যয় মোকাবিলার টিম।
বন্দর এলাকার বাসিন্দা পঞ্চানন সামন্ত বলেন, ধান্যঘোরী গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় রয়েছে। বন্দরের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া দুর্গামন্দিরের একাংশ জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে। জল যেভাবে বাড়ছে এলাকার মানুষকে দ্রুত সরিয়ে না নিয়ে গেলে জীবনহানির ঘটনা ঘটতে পারে। কাকনানের বাসিন্দা লক্ষ্মী সামন্ত বলেন, জমিতে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছিল। সব এখন জলের তলায়। বাড়ির কাছে জল চলে এসেছে। জল আর একটু বাড়লেই পরিবার নিয়ে উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে হবে।
খানাকুলের তৃণমূল নেতা মুন্সি নজবুল করিম বলেন, বাঁধ ভাঙার পর থেকে খানাকুলের একের পর এক এলাকা জলের তলায়। বহু মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাঁদের উদ্ধারে জাতীয় বিপর্যয় টিমকে সহযোগিতা করছে তৃণমূলের যুব কর্মীরা। প্রচুর মানুষ এখনও জলবন্দি রয়েছেন। এলাকায় আরও রেসকিউ টিম পাঠানোর জন্য প্রশাসনকে জানিয়েছি।
খানাকুল-১ বিডিও শান্তুনু চক্রবর্তী বলেন, অত্যধিক বৃষ্টি ও পার্শ্ববর্তী দু’টি জেলার জল খানাকুলে ঢোকার জন্যই এই বিপর্যয়। ঠাকুরানিচকের দু’টো ও কিশোরপুরে বাঁধ ভাঙার জন্যই বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে গিয়েছে। শনিবার এনডিআরএফের একটি টিমের বোট জলের তোড়ে উল্টে যায়। তবে রাতেই তাঁদের উদ্ধার করা হয়। ব্লকের আধিকারিক থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সদ্যসরা ২৪ ঘণ্টা বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করছেন। নৌকা করে জলবন্দি মানুষদের শুকনো খাবার, পরিস্রুত জল ও বেবি ফুড পাঠানো হচ্ছে। বহু গ্ৰাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এই মুহূর্তে আমাদের একটাই লক্ষ্য, জলবন্দি এলাকার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা। নিজস্ব চিত্র