নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বৃহস্পতিবারও রাতভর বৃষ্টি হল কলকাতায়। যার জেরে জলমগ্ন শহরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দু’জনের। রাত ১১টার পর ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয় কলকাতায়। যার জেরে শুক্রবার দিনভর জলমগ্ন ছিল শহরের বিভিন্ন অংশ। সেই জমা জল থেকেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে দুই ব্যক্তি মারা গিয়েছেন বলে খবর। একটি ঘটনা ঘটেছে হরিদেবপুরে, অন্যটি পাটুলিতে। বৃহস্পতিবার রাতে জোকার বাঁশতলা এলাকায় মারা গিয়েছেন মানিক বারুই (৩৪) নামের এক ব্যক্তি। পেশায় গাড়িচালক ওই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ বাঁশতলা হয়ে বাড়ি ফেরার সময় আচমকা তাঁর উপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। হরিদেবপুর থানার পুলিস তাঁকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে, পাটুলিতেও এক যুবক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। বিপি টাউনশিপ এলাকায় জমা জলে মাছ ধরছিলেন সুজয় মণ্ডল (১৮)। সেই সময় বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে চলে আসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। জমা জলে দীর্ঘক্ষণ পড়ে ছিলেন তিনি। খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে এসে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। যদিও সিইএসসি জানিয়েছে, আর্থওয়্যার ছিঁড়ে পড়েছিল। সেই তারে বিদ্যুৎ থাকে না। যে তারে বিদ্যুৎ থাকে, সেটি অক্ষত ছিল। ফলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা কি না, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে। পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। যদি আমাদের তরফে কোনও গাফিলতি হয়, তাহলে মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সিইএসসি’র তরফে কোনও গাফিলতি থাকলে রাজ্য প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। হরিদেবপুরে যেখানে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগ কাজ করছিল, নাকি কেইআইপি’র নিকাশি পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হচ্ছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে আমি এমন ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইছি।
অন্যদিকে, সুরেন্দ্রনাথ কলেজের কাছে একটি পুরনো তিনতলা বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৬/৪ নুর মহম্মদ লেনের ওই বাড়িটি বিপজ্জনক অবস্থা ছিল। যদিও হতাহতের কোনও খবর নেই। খবর পেয়ে আসে স্থানীয় থানার পুলিস। আসেন কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরাও। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিন সেচদপ্তরের সঙ্গে শহরের নিকাশি খালগুলির পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। এদিনও আলিপুর, কসবা, গড়িয়া, মুকুন্দপুর, ঢাকুরিয়া, কালিকাপুর, বালিগঞ্জ, বেহালা, খিদিরপুর, যাদবপুর এবং গার্ডেনরিচের বিস্তীর্ণ অংশে জমা জল এখনও নামেনি। রাতের দিকে অবশ্য কিছু জায়গা থেকে জল নেমেছে বলে দাবি করেছে কলকাতা পুরসভা।