বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সম্প্রতি ওই মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দেখে কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কোর্টের মুখ্য ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপকুমার অধিকারী প্রশ্ন তোলেন, অভিযুক্ত যদি পজিটিভ হয়ে থাকেন, তাহলে সেই রিপোর্ট কোথায়? যা পেশ করা হয়েছে, সেটা স্রেফ একটা ডাক্তারি সার্টিফিকেট। ওই সার্টিফিকেট যে ভুয়ো, তাও স্পষ্ট হয় আদালতে। এরপরই ক্ষুব্ধ বিচারক ওই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসককে সশরীরে কোর্টে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে বলেন। পাশাপাশি অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানোরও নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই চিকিৎসক নির্দিষ্ট দিনে মিউনিসিপ্যাল কোর্টে হাজির হন। সেখানে বিচারক চিকিৎসককে বলেন, যেখানে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেই, সেখানে আপনি কী করে একজন ‘রোগী’কে ১৪ দিনের জন্য সেফ হোমে পাঠানোর সুপারিশ করেন। তাহলে কি আমি ধরে নেব, আপনার দেওয়া মেডিক্যাল সার্টিফিকেটটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। বিচারকের মন্তব্য, আপনি যা করেছেন, তা ফৌজদারি অপরাধের শামিল। আদালত স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়ের করলে আপনাকে এই মুহূর্তে জেলে যেতে হবে। এই বয়সে যা আপনার পক্ষে সমীচীন হবে না। এরপরই প্রবীণ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক নিজের দোষ কবুল করে বিচারককে বলেন, ভবিষ্যতে তিনি আর এই ধরনের কাজ করবেন না। ওই কথা শোনার পর বিচারক ওই চিকিৎসককে মাথা উঁচু করে চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন। বলেন, যত বাধা, প্রলোভনই আসুক না কেন, কোনও কিছুর বিনিময়ে আত্মমর্যাদাকে বিসর্জন দেবেন না। বিচারকের মন্তব্য, আপনার বয়েসের কথা চিন্তা করে আদালত কড়া পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকল।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে একবালপুর থানা এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলকাতা পুরসভা মামলা দায়ের করে। মামলায় অভিযুক্ত করা হয় বাড়ির মালিককে। পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করে। সেই মামলা সূত্রে পুলিস তাঁকে নোটিস দিয়ে থানায় ডেকে পাঠায়। কিন্তু তিনি গ্রেপ্তার হতে পারেন, এই আশঙ্কায় ওই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের কাছ গিয়ে ভুয়ো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নেন। যা দেখিয়ে তিনি পুলিস ও আদালতের হাত থেকে পার পাওয়ার ফন্দি এঁটেছিলেন। সরকারি আইনজীবীর মন্তব্য, কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তকে জেলেই যেতে হল। আর অভিযুক্তকে ভুয়ো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দিয়ে সাহায্য করার দায়ে প্রবীণ চিকিৎসককে পড়তে হল কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে।