পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
সকাল ১১টা বেজে ১৫ মিনিট। বেহালা পাঠকপাড়ার একটি চায়ের স্টল তখনও খোলা। চায়ের কাপে কাপে জমে উঠছে রাজনৈতিক তরজা।
দুপুর ঠিক সাড়ে ১২টা। বিবাদি বাগ চত্বরের একটি গলির ভিতর খোলা রয়েছে একাধিক জেরক্সের দোকান। শাটার অর্ধেকটা নামানো। গ্রাহক এলেই সেখানে নেওয়া হচ্ছে জেরক্সের অর্ডার।
বিকেল পৌনে ৪টে। উত্তর কলকাতার জগৎ মুখার্জি পার্ক সংলগ্ন এলাকায় পরপর দু’টি পান-সিগারেটের দোকান খোলা। একটির শাটার অর্ধেক নামানো এবং অপরটির দরজা হাট করে খুলে অবাধে চলছে বেচাকেনা। দোকানের বাইরে চারজন ক্রেতা প্রায় গা ঘেঁষাঘেষি করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
শহর ঘুরে দেখা গেল নামেই লকডাউন বা আত্মশাসন। পুলিশের লাল চোখ এড়িয়ে শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে অবাধে চলছে আত্মশাসনের বিধিভঙ্গ। মানুষের উদাসীনতা চরমে। বড় রাস্তার উপর লকডাউন মানা হলেও অসচেতনতা রয়ে গিয়েছে অলিতে গলিতে। প্রতিদিন করোনার থাবায় তৈরি হচ্ছে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর নতুন নতুন রেকর্ড। তা সত্ত্বেও ফিরছে না হুঁশ। নিয়মভাঙার সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে। কোথাও তার এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু কেন এই নির্বিকার উদাসীনতা? বেহালা পাঠকপাড়ার ওই চায়ের দোকানের ব্যবসায়ীর দায়সারা উত্তর, ‘এই তো বন্ধ করে দিয়েছি। আর কাউকে চা বিক্রি করব না।’ আড্ডার আসর ভেঙে নিমেষে উপস্থিত খদ্দেররা বাড়ির পথে হাঁটা দিলেন।
বিবাদী বাগ এলাকার ওই জেরক্স দোকানের মালিক আরও এক মজার জবাব দিলেন, ‘দেখুন না, শাটার তো অর্ধেক নামানো। গরমের জন্য অর্ধেকটা খুলে রেখেছি। তাই জেরক্স করাবেন বলে উনি এসেছেন। আমি হবে না বলে দিয়েছি।’ যদিও কাস্টমার এবং দোকানের মালিককে নিজেদের মধ্যে কাগজপত্র ও টাকা-পয়সা বিনিময় করতে দেখা গেল। উত্তর কলকাতায় অলিতে গলিতে রকের আড্ডা এখনও অব্যাহত। শোভাবাজার, গিরিশ পার্ক, শ্যামবাজার কিংবা মানিকতলা অঞ্চলে নির্ধারিত সময়ে দোকান বন্ধ করার অভ্যাস এখনও রপ্ত করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। ক্রেতার দেখা না থাকলেও দোকানের ভিতর চলছে আড্ডা।
উত্তর, দক্ষিণ কিংবা মধ্য কলকাতার একাধিক পাড়ায় শাটার নামিয়ে চলছে ব্যবসা। বেহালা-ঠাকুরপুকুর চত্বরে অলিগলির ভিতরে বহু সেলুন রয়েছে। লকডাউনের বাজারে ব্যবসা চালানোর নয়া পদ্ধতি অবলম্বন করছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানের ঝাঁপ বন্ধ থাকছে সারাদিন। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই। তবে খদ্দের শাটারে টোকা মারলেই ভিতর থেকে অর্ধেকটা খুলে দেওয়া হচ্ছে। খদ্দের ভিতরে ঢোকা মাত্রই ফের নেমে যাচ্ছে শাটার। বন্ধ শাটারের ওপারে চলছে ক্ষৌরকর্ম। এভাবেই লুকিয়ে-চুরিয়ে একাধিক জায়গায় চলছে সেলুন ব্যবসা সহ অন্যান্য কিছু ব্যবসা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, প্রশাসনের নজরের বাইরে শহরের দু-এক জায়গায় জিম খোলা রাখার অভিযোগও পাওয়া গিয়েছে। লকডাউন ঘোষণার পরেও ডানলপ চত্বরের একটি জিমে ঢুকতে ও বেরতে দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকজনকে। এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় কিছু বাসিন্দার। শুধু তাই নয়, লকডাউন চলাকালীন ওই জিমে শারীরিক কসরৎ করার ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতেও দেখা গিয়েছে। একই অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে মোমিনপুর এলাকার একটি জিমেও।