পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
আশিস মার্কেটে বেশ কয়েকজন যুবক চায়ের দোকানে গল্প করছেন। একজন বলেন, আমি বিমা কোম্পানির এজেন্টের কাজ করি। যেভাবে অনলাইন সবকিছু করার পরিকল্পনা কেন্দ্রের আর আমাদের ক্ষেত্রকে বিলগ্নিকরণ করা হচ্ছে, তাতে কতদিন আর কাজ করতে পারব জানি না। তখন মধ্যবয়স্ক একজন বলেন, ডিএসপি কবে বিক্রি করে দেয় দেখ। আশঙ্কার নানা দিক ফুটে উঠছে দুর্গাপুরের নানা আড্ডায়।
পরের দিন সকালে গ্রামের পথে মলানদিঘি হাটতলায় এসেছেন বিজেপির দলবদলু প্রার্থী দীপ্তাংশু চৌধুরী। এক সিপিএম ও এক তৃণমূল নেতার হাতে পতাকা তুলে দিয়ে বিজেপির নামে জয়ধ্বনী দিলেন তিনি। বিজেপির ফ্লেক্সে মোড়া হুড খোলা গাড়িতে না উঠে নিজের গাড়িতে উঠলেন। গেরুয়া উত্তরীয় পরা এক বিজেপি নেতার সঙ্গে গাড়িতে বসেই কথা বলছিলেন। অদূরে দাঁড়িয়ে সানগ্লাস পরা আর এক নেতা সেই নেতার উদ্দেশে বললেন, খুব বেশি বুঝে গিয়েছিস তো, তোর হচ্ছে। প্রার্থী রওনা দিলেন। উত্তরীয় পরা নেতা দ্রুত এলাকা ছাড়লেন। জানা গেল এখানে বিজেপির একাধিক গোষ্ঠী। শুধু গোষ্ঠীবাজিতেই থেমে নেই, একাধিক আদি নেতা নির্দলে দাঁড়িয়ে কাঁটা ফোটাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থীর পায়ে। যদিও প্রার্থীর দাবি, বিজেপিকে জেতাতে সকলে একসঙ্গে ময়দানে নেমে কাজ করছেন।
বিজেপিতে যোগ দেওয়া সিপিএম ও তৃণমূল নেতার দাবি, ২০১৯ সালেও বিজেপির হয়েই ভোট করেছি। এবার প্রকাশ্যে এলাম। কিন্তু যা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখছি আমাদেরই তা মেটাতে হবে। তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে শাসক দলের এক যুব নেতা বলেন, আমাদের দলেও ব্যাপক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু এবার সবাই বুঝেছে দল ক্ষমতায় না থাকলে কিছুই থাকবে না। তাই সবাই এক হয়েছে। মলানদিঘি থেকে গোপালপুর যাওয়ার পথে পড়ল আড়ার বিখ্যাত প্রাচীন শিবমন্দির। ওই মন্দির পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা। মন্দিরের তরুণ পূজারি শুভ্র চক্রবর্তী বললেন, দিদিই থাক। কাজ তো করেছেন। মন্দিরের পাশ দিয়েই ঝাঁ চকচকে পিচের রাস্তা চলে গিয়েছে রাজবাঁধ পর্যন্ত। কিছুদিন আগেই প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাস্তা সংস্কার করেছে জেলা পরিষদ। রাস্তা থেকে পানীয় জল গ্রামের উন্নয়ন চোখের সামনেই রয়েছে। তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল গতবারের হারের পর তিনি আর সেভাবে সংযোগ রাখেননি। প্রার্থী প্রদীপ মজুমদারের দাবি, চারটি চেক ড্যাম্প করা হয়েছে। শ্যামারূপা মন্দিরের উন্নয়ন হয়েছে। খোঁজ নিলেই বুঝতে পারবেন কে করেছে।
অন্যদিকে, বাম প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরীর প্রচারেও বাড়তি সাড়া পড়েছে। চণ্ডীদাসে পাঞ্জাবির বোতাম ঠিক করতে গিয়েও সেলফির আবদার মেটাতে হয়েছে। ‘সারা বছর মানুষের পাশে থেকে রুজিরুটির যে আন্দোলন আমরা করেছি, তার সুফল মিলবে’, জানালেন সিপিএম প্রার্থী।
২০১৬ সালে ৮৪ হাজার ভোট পেয়ে এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল সিপিএম। গত লোকসভায় সেই সিপিএমই ভোট পেয়েছিল ৩৩ হাজার। তৃণমূলের ভোট কমলেও লোকসভায় ৬৪ হাজার ভোট পেয়েছিল। এই কেন্দ্রে মধ্যবিত্ত ভোট বড় ফ্যাক্টর। তাঁদের বিজেপির প্রতি রুষ্টতা বাড়তি অক্সিজেন দিচ্ছে তৃণমূল, সিপিএমকে।