বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত প্রেমিকের নাম সৌমেন সাহা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দমদমের শেঠ বাগান এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছিল। সরকারি পক্ষের আইনজীবী সত্যব্রত দাস বলেন, আক্রান্ত তরুণীর নাম সঞ্চিতা যাদব। ঘটনার সময় তাঁর বয়স ছিল ২২ বছর। তাঁর সঙ্গে সৌমেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু, পরে সঞ্চিতা বুঝতে পারেন, সৌমেন তাঁকে মিথ্যা কথা বলে প্রেমের ফাঁদে ফাঁসিয়েছে। কোথায় তার বাড়ি, কী করে, কোথায় থাকে, এইসব কিছুই সে সঞ্চিতাকে বলত না। সৌমেন তার সঙ্গে খারাপ আচরণও করত। তাই সম্পর্ক থেকে সরে এসেছিলেন সঞ্চিতা। ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় সৌমেন সঞ্চিতাকে দমদমের শেঠবাগানে একটি অ্যাপার্টমেন্টের সামনে ডেকে পাঠায়। সঞ্চিতা গিয়েছিলেনও। কিন্তু, পৌঁছনোমাত্রই সৌমেন তাঁর মুখে অ্যাসিড ছুড়ে পালিয়ে যায়।
অ্যাসিডে সঞ্চিতার মুখের ডানদিক পুরো ঝলসে যায়। তাঁকে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। মুখের ডানদিক পুড়ে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাঁর ডানচোখও সারা জীবনের জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সঞ্চিতার মা অলোকা যাদব দমদম থানায় সৌমেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই সৌমেন পলাতক ছিল। চারবছর ধরে পুলিস তার কোনও খোঁজ পায়নি। পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থেকে পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। সমস্ত সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬-এ ধারায় আদালত ৯ এপ্রিল সৌমেনকে দোষী সাব্যস্ত করে। এদিন তার সাজা ঘোষণার হল। সত্যব্রতবাবু বলেন, সঞ্চিতা এজলাসে এসে এদিন নিজের মুখের পোড়া অংশ আদালতকে দেখান। যেহেতু প্রায়ই অ্যাসিড হামলার ঘটনা ঘটে, তাই আমি আদালতের কাছে দোষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দাবি জানিয়েছিলাম, যাতে জেলার প্রথম মামলাটি শাস্তিদানের নিরিখে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
দোষী যুবক অবশ্য এদিন সাজা ঘোষণার সময় নিজের অপরাধ কবুল করেছে। যেহেতু তার বয়স কম, তাই বিচারক তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্তকে যে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, সেই টাকা আক্রান্ত তরুণীকে দিতে হবে। সেই সঙ্গে বিচারক আক্রান্ত তরুণীকে নায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য স্টেট লিগল এইড কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। মুর্শিদাবাদে একটি অ্যাসিড মামলার সাজা হয়েছিল। কিন্তু, সেখানে জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের নির্দেশ ছিল না। ক্ষতিপূরণ সহ সাজার মামলা হিসেবে এটি রাজ্যেরও প্রথম সাজা।