রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমানা পুনর্বিন্যাসের জেরে ২০১১ সালে পৃথক মধ্যমগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র গঠন হয়। মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৮টি ওয়ার্ড ছাড়াও বারাসত১ ও ২ ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এই কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে। যত দিন যাচ্ছে কলকাতা বিমানবন্দর লাগোয়া মধ্যমগ্রাম শহরের ব্যাপ্তি ও গুরুত্ব ততই বাড়ছে। শহর লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকাতেও তৈরি হচ্ছে একের পর এক বহুতল ও কলোনি। স্থানীয় মানুষের দাবি, এলাকার বিধায়ক তথা মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে গত এক দশকে রথীন ঘোষ মধ্যমগ্রামের উন্নয়নে গতি সঞ্চারের চেষ্টা করেছেন। মধ্যমগ্রাম পুলিস ফাঁড়ি থেকে পূর্ণাঙ্গ থানা গঠন, ফায়ার ব্রিগেড, গঙ্গার পরিশুদ্ধ পানীয় জল এনে সরবরাহ বৃদ্ধি করা, জল নিকাশি ব্যবস্থার স্থায়ী সমাধানের জন্য জমি কিনে নোয়াই খালের সংস্কার, বাদু রোড, যশোর রোড ও সোদপুর রাস্তা সম্প্রসারণ, একাধিক কমিউনিটি হল, পথবাতির মতো নানান উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে মধ্যমগ্রাম শহরে। চৌমাথা মোড়ে ঋক ভট্টাচার্যের গলাতেও ছিল উন্নয়নমূলক কাজের হিসেব। শুধু ঋকবাবু নন, সেখানে বসা ইমন দত্ত, সুব্রত বিশ্বাসরা বলেন, আশপাশের এলাকার তুলনায় মধ্যমগ্রামে উন্নয়ন খালি চোখে অনেক বেশি চোখে পড়ে। যে-কোনও সমস্যায় বিধায়ককে সবসময় পাওয়া যায়। আগের মতো গুন্ডারাজও নেই। যে যাই বলুক, এলাকার উন্নয়নের জন্য রথীনদার বিকল্প নেই। রোহন্ডা-চণ্ডীগড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাঠে সব্জি তোলায় ব্যস্ত ফারুক ইসলাম, সুবল মণ্ডল বলেন, দাদা যে দলই আসুক আমাদের কাজ করে খেতে হবে। কিন্তু শান্তিতে থাকছি কি না সেটাই বড় কথা। তাছাড়া রথীনবাবুকে হাতের কাছে পাওয়া যায়। এলাকায় নানান কাজ করেছেন। তাই হাওয়া এবার ওঁর দিকেই বেশি মনে হচ্ছে। বিরোধীরাও জোরদার প্রচার করছে। তবে পঞ্চায়েত স্তরের কিছু দুর্নীতি নিয়ে মানুষ ক্ষুব্ধ।
২০১১ সালে রথীনবাবু বাম প্রার্থীকে ৩৪ হাজার ৬৬৮ ভোটে ও ২০১৬ সালে ৩৫,৮৩৬ ভোটে হারান। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে ৩৭,৬০০ ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। ভোটের হিসেবেই স্পষ্ট এই কেন্দ্রে এবার যথেষ্ট সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে শাসক শিবির। তার উপর বিরোধী ভোট ভাগাভাগির অঙ্ক তৃণমূলের ভোট ম্যানেজারদের মুখের হাসি চওড়া করেছে। এই বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৭৩ হাজার। তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ধস নামানোর অঙ্কে এই কেন্দ্র বামেরা আইএসএফকে ছেড়ে দিয়েছে। বিজেপির সেলিব্রিটি প্রার্থী রাজশ্রী রাজবংশী রাজনীতির নতুন ইনিংস খেললেও প্রথম দিন থেকেই ক্রিজে মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকছেন। রথীনবাবুর বিরুদ্ধে প্রচারে ঝড় তোলা আইএসএফ প্রার্থী বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, মধ্যমগ্রামে গত পাঁচবছরে ১৪৭টি পুকুর ভরাট করে প্রোমোটারি করা হয়েছে। এলাকায় তোলাবাজি, প্রোমোটাররাজ ও সিন্ডিকেটের মূল মাথা রথীনবাবু। মধ্যমগ্রামের সন্তান অমিতাভ মালিককে খুন করেছিল বিমল গুরুং বাহিনী। এখন সেই গুরুং কলকাতায় পুলিসি নিরাপত্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তৃণমূল সরকারের সঙ্গে বিমল গুরুং পার্টির জোট হয়েছে। তার উপর সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপোষণ ও বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দায় তৃণমূলের বিধায়ককে নিতে হবে। এবার মানুষ ভোট দিতে পারলে মধ্যমগ্রামে পরিবর্তন নিশ্চিত। বিজেপি প্রার্থী রাজশ্রী দেবী বলেন, মধ্যমগ্রামে উন্নয়ন সেভাবে হয়নি। কেন্দ্রের টাকা শুধু নয়ছয় করা হয়েছে। ‘সোনার বাংলা’ গড়ার জন্য মধ্যমগ্রামের সাধারণ মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন।
অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগের জবাব দিয়ে রথীনবাবু বলেন, আমি কারও বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণে বিশ্বাস করি না। আমার কাজের সার্টিফিকেট মানুষ দেবেন। গত একদশকে বিধায়ক কিংবা পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে শুধু মানবধর্ম পালন করেছি। দল দেখে মানুষ বিচার করিনি কোনওদিন। আমি কী কাজ করেছি, তা মধ্যমগ্রাম কেন্দ্রের মানুষই সবচেয়ে ভালো জানেন। অতএব জয়ের বিষয়ে আমি ১০০ শতাংশ আশাবাদী।