পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
অথচ, সেই বৃদ্ধ বুধন বর্মনকে বেমালুম ভুলে ব্রিগেডে একা ফেলে পালিয়ে গেলেন দলের সঙ্গী-সাথীরা। মোদির ভাষণ শেষ হতেই ফাঁকা ব্রিগেড। অচেনা কলকাতায় অসহায় বুধন। উত্তরবঙ্গের কালিয়াগঞ্জে বাড়ি তাঁর। স্টেশনের খোঁজে হাঁটতে হাঁটতে বারাসত পর্যন্ত পৌঁছে যান। পকেটে কানাকড়ি নেই। খাওয়া-দাওয়া নেই। ক্লান্ত শরীর নিয়ে আর হাঁটতে পারছিলেন না বুধন। আর তখনই ত্রাতা হিসেবে হাজির হন শাসনের তৃণমূলকর্মীরা। তাঁকে আদর-আপ্যায়ন করে খাইয়ে-দাইয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দেন তাঁরা। বুধনকে ফিরে পেয়ে খুশি তাঁর পরিবারের লোকেরা। তৃণমূলকর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন—‘এমন মানবিকতা দেখে আমরা মুগ্ধ।’ যদিও এই ঘটনাটিকে ব্যতিক্রমী বলতে নারাজ শাসনের তৃণমূল নেতৃত্ব। স্থানীয় নেতা মেহেদি হাসান বলেন, ‘দলনেত্রীর কাছ থেকে আমরা এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি শিখেছি। এটা আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মানবিকতার প্রতীক।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিজেপির ব্রিগেড সমাবেশ সফল করতে উত্তরবঙ্গ থেকে ট্রেনে চেপে বিজেপি কর্মীরা ভিড় জমিয়েছিলেন। কালিয়াগঞ্জ থেকে হাজার দুয়েক কর্মী ব্রিগেডে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনা ও কলকাতা ঘুরে দেখতে ৭০ বছরের বুধনও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। প্রথমে পরিচিতদের সঙ্গেই ব্রিগেড সহ আশপাশের এলাকায় ঘুরেছিলেন। তার পর সভা চলাকালীনই তিনি দলছুট হয়ে যান। গোটা ব্রিগেড তন্নতন্ন করে খুঁজেও সঙ্গীদের হদিশ পাননি তিনি। পথ হারিয়ে হারিয়ে ফেলেন। উত্তরবঙ্গে ফেরার ট্রেন ধরেতে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু পথ ভুল করে তিনি রাজারহাট হয়ে বারাসত২ ব্লকের শাসন এলাকার আমিনপুর বাজারে চলে আসেন। রাত তখন ৯টা। বাজারের এদিক থেকে ওদিকে উদভ্রান্তের মতো ঘুরছিলেন বুধন। ওই সময় তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে দেখতে পান। তাঁদের সন্দেহ হওয়ায় বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কথায় কথায় বৃদ্ধ জানান, তাঁর বাড়ি কালিয়াগঞ্জ। তিনি বিজেপির একজন সক্রিয় কর্মী। ব্রিগেডের মিটিংয়ে এসে তিনি হারিয়ে গিয়েছেন। সঙ্গীদের খোঁজে হাঁটতে হাঁটতে তিনি এখানে চলে এসেছেন। এরপর তৃণমূল কর্মীরা ওই বৃদ্ধকে বাজারের একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে যত্ন করে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। শাসন থানার সঙ্গে কথা বলে বৃদ্ধকে পুলিসের হাতে তুলে দেন তাঁরা। পুলিসের তরফে কালিয়াগঞ্জ থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বৃদ্ধের বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হয়। বুধনের সঙ্গে ছিল একটি দলীয় কার্ড। তাতে এক নেতার ফোন নম্বরও ছিল। সেই নম্বরে ফোন করে সঙ্গীদেরও বিষয়টি জানায় পুলিস। সোমবার সকালে বৃদ্ধের পরিবারের লোকেরা শাসন থানায় এসে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান।
এদিন বাড়ি ফেরার আগে বুধন বর্মণ বলেন, ‘তৃণমূল কর্মীরা আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করেছেন। শেষ পর্যন্ত আমাকে পুলিসের কাছে পৌঁছে দেন ওঁরা। ওঁদের এই মানবিকতা আমি কখনও ভুলব না।’ এদিন শাসন থানায় বুধনকে নিতে এসেছিলেন কালিয়াগঞ্জের বিজেপি পৌরমণ্ডলের নেতা ভবানিচরণ সিংহ। তিনি বলেন, ‘বুধেনবাবুকে হারিয়ে আমরা খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। এখানকার তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে পুলিসের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁদের অমায়িক ব্যবহারে
আমরা মুগ্ধ।’