বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
নিমতিতা বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বিস্ফোরক নিয়ে প্রথম থেকেই ধন্দে ছিলেন অফিসাররা। তবে বড় ধরনের রাসায়নিক যে ব্যবহার করা হয়েছে তা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর ইঙ্গিত পাচ্ছিলেন তাঁরা। তা কম মাত্রায় থাকায় কারও মৃত্যু হয়নি বা আরও বড় ধরনের কোনও ক্ষতি হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু লোহার পাত পান। তার গায়ে গেরুয়া ও হলুদ রঙের দাগ ছিল। সেখান থেকে বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছিলেন, আর্সেনিক সালফাইড ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর উঠে এল তাঁদের অনুমান ঠিকই ছিল।
আসলে এই রাসায়নিক বাজারে খুব সহজলভ্য। দাম বেশি নয়। সেই কারণে বিস্ফোরক যারা তৈরি করে তাদের কাছে এই রাসায়নিকের কদর রয়েছে। এই বিস্ফোরকের রং হালকা গেরুরা রঙের। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, এই রাসায়নিক একা বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। এর সঙ্গে সালফার বা অন্য কোনও রাসায়নিক মেশাতে হয়। তবেই বিস্ফোরণ ঘটবে। যত বেশি মাত্রায় আর্সেনিক সালফাইড থাকবে বিস্ফোরণ তত ভয়াবহ হবে। ২০১৭ সালের মার্চে বিহারের ঘোরাসানের রেলওয়ে ট্র্যাকে বিস্ফোরণ ঘটে। উড়ে যায় রেল লাইন। সেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল আর্সেনিক সালফাইড। এই রেল ট্র্যাকে বিস্ফোরণের জন্য আইইডি ব্যবহার করা হয়। এর তদন্ত করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তার সঙ্গে মুর্শিদাবাদের নিমতিত বিস্ফোরণের মিল পাচ্ছে এনআইএ। এই বিস্ফোরক মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় খোলা বাজারে পাওযা যায়। কিন্তু উপযুক্ত লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে এই বিস্ফোরক এখানে রমরমিয়ে পাওয়া যাচ্ছে তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন আধিকারিকরা। কোথা থেকে এই বিস্ফোরক কেনা হয়েছিল তা হেফাজতে ধাকা অভিযুক্তদের জেরা করে জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, বিস্ফোরক রাখার জন্য কনটেনার তৈরি করা হয়। এটি বাক্স বা টিফিন কেরিয়ার জাতীয় কিছু ছিল। এটি তৈরির জন্য বড় বড় লোহার পাত ব্যবহার করা হয়। যে কারণে বিস্ফোরণ ঘটার পর বহু দূর পর্যন্ত লোহার টুকরো গিয়েছে। উদ্ধার হওয়া সামগ্রী এককাট্টা করে কনটেনারটি পুনর্নির্মাণ করার চেষ্টা করছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও তদন্তকারী অফিসাররা।