কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কেশব সেন স্ট্রিটের ঘটনা। কোনওমতে শ্বশুড়বাড়ি থেকে পালিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে আমহার্স্ট স্ট্রিট মহিলা থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। অভিযোগ, পুলিস তখন নিষ্ক্রিয় ছিল। পরে তিন সহৃদয় আইনজীবীর মাধ্যমে বিচার ভবনে এসিএমএম-২ বিচারক সঙ্গীতা চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তার ভিত্তিতেই মঙ্গলবার আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা, খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি, মারধর, জালিয়াতি, বধূ নির্যাতনের মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছে পুলিসকে।
নির্যাতিতার অভিযোগ, তাঁর বাবার সঙ্গে পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে মাত্র ন’-দশ বছর বয়সে তাঁকে বিহারের ভাগলপুর থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন সঞ্জয় পাণ্ডে। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কলকাতায় রেখেই পড়াশোনা করানো হবে। এরপর ওই নাবালিকার সঙ্গে নিজের মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে আদিত্যর বিয়ে দেন। বিয়ের পর আর বাপের বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে দেয়নি এই পরিবার। অভিযোগে বলা হয়েছে, বিয়ের পর থেকেই নববধূর উপর যৌন নির্যাতন শুরু করেন শ্বশুর সঞ্জয় পাণ্ডে ও তিন খুড়শ্বশুর মনীশ পাণ্ডে, বিবেক পাণ্ডে এবং উজ্বল পাণ্ডে। প্রতিবাদ করলে শাশুড়ি পূর্ণিমা পাণ্ডে বলে, ওসব জানি না। আমার বংশরক্ষা করতে হবে। এভাবেই ২০০৯ সাল থেকে কার্যত এক যুগ ধরে বিবাহিত জীবন নরক যন্ত্রণায় ভরে গিয়েছে বছর একুশের ওই গৃহবধূর।
বিষয়টি বাড়াবাড়ি হয় গত ২৭ জানুয়ারি। সেদিন ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। পরের দিন কেষ্টপুরের বাড়িতে বেড়াতে গেলে, সেখান থেকে পালিয়ে যান ওই বধূ। রাস্তায় উদ্ভ্রান্তের মতো ঘোরার সময় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নজরে পড়েন তিনি। তারাই প্রথমে উদ্ধার করেন তাঁকে। এমনকী আমহার্স্ট স্ট্রিট মহিলা থানায় অভিযোগও জানানো হয়। কিন্তু পুলিস নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ। এরপর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোম থেকে পালান ওই গৃহবধূ। এক সহৃদয় মহিলার মাধ্যমে বিষয়টি নজরে আসে কলকাতা হাইকোর্টের তিন আইনজীবী সোমশুভ্রা গঙ্গোপাধ্যায়, স্বাতী সিং এবং অভিষেক চক্রবর্তীর।
তাঁরা প্রথমে ১৩ ফেব্রুয়ারি আমহার্স্ট স্ট্রিট মহিলা থানায় ডাকযোগে অভিযোগ জানান। কিন্তু কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি কলকাতার পুলিস কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানান। তাতেও সাড়া না মেলায় আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। এই ঘটনায় আদালত ১৬ মার্চের মধ্যে পুলিসকে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছে।