বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
আপাতভাবে মাদক উদ্ধারের ঘটনা হলেও অভিযুক্তদের হাতেনাতে পাকড়াও করার কৌশলটি অভিনব। বিধাননগর পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে খবর ছিল, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে উত্তরবঙ্গে আসছে গাঁজা সহ বিভিন্ন মাদক। সেখান থেকে কলকাতায় ট্রেনে করে সেগুলি আনা হচ্ছে। আগেও এই পদ্ধতিতে একাধিকবার মাদক ঢুকেছে কলকাতায়। উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতামুখী ট্রেনগুলি বেশিরভাগই ভোরের দিকে শহরে এসে পৌঁছয়। সাধারণত কলকাতা বা শিয়ালদহ স্টেশনে এমনিতেই কড়া নজরদারি থাকে। তাই মাদক পাচারকারীরা ভোররাতে দমদম স্টেশন সংলগ্ন রেললাইনকেই বেছে নেয় মাদক ভর্তি প্যাকেট নামানোর জন্য। সাধারণত দমদম পেরনোর পর ট্রেনের গতি কমে যায়। রেললাইনের ধারে তৈরি থাকে ‘রিসিভার’রা। তাদের কাছে আগে থেকেই খবর থাকে, কোন কামরায় রয়েছে মাদকের প্যাকেট। সংশ্লিষ্ট কামরায় টর্চের আলো ফেলে ‘সিগন্যাল’ দিলে ট্রেনে থাকা পাচারকারীরা বুঝে যায়, মাদক নেওয়ার জন্য লোক হাজির। সেই মতো তারা মাদক ভর্তি প্যাকেট ফেলতে শুরু করে। ট্রেন চলে গেলে ওই বস্তা তুলে নেয় ‘রিসিভাররা’। এরপর লাইনের ধারে দাঁড় করানো অটো বা টোটোয় সেগুলি তুলে নিয়ে পগাড় পার। সেই মাদক এরপর বিভিন্ন হাত ঘুরে পৌঁছে যায় ক্রেতাদের কাছে। বিক্রি হয় চড়া দামে।
পাচারের এই কৌশল সম্পর্কে আগে থেকেই বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন বিধাননগর পুলিসের গোয়েন্দারা। মাদক আসার খবর পাওয়ামাত্র তাঁদের একটি টিম উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতাগামী একটি ট্রেনে যাত্রী সেজে উঠে পড়ে। ট্রেনটি দমদম স্টেশন পেরলে পাচারকারীরা তাদের বাঁধা ছকে কাজ শুরু করে। টর্চের ‘সিগন্যাল’ চলন্ত ট্রেনে পড়তেই শুরু করে গাঁজার প্যাকেট ফেলার কাজ। সেই মুহূর্তে অভিযুক্তদের হাতেনাতে পাকড়াও করেন গোয়েন্দারা। একইসঙ্গে, ট্রেন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ‘রিসিভার’কেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে খবর। যে অটো করে এই পাচার চলত, সেটিকেও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া দুই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন গোয়েন্দারা। এই পাচারকাণ্ডের সঙ্গে আর কে কে চক্র জড়িত, তা তদন্ত করে বের করার চেষ্টা চলছে।