বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: চাঁপদানির গরিব চটকল শ্রমিক চিত্তরঞ্জন সাউ। স্লিপ ডিস্কের সমস্যায় কোমর ও পায়ের অসহ্য যন্ত্রণায় অসম্ভব কষ্ট পাচ্ছিলেন তিনি। হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে আবার আক্রান্ত হয়েছিলেন কোভিডে। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, মেরুদণ্ডের কোমরের অংশের চার ও পাঁচ নম্বর হাড়ের মাঝের চাকতি বেরিয়ে এসেছে। এতটাই খারাপ অবস্থা যে অপারেশন ছাড়া আর কোনও গতি নেই। শুনেই আকাশ ভেঙে পড়েছিল ৩৫ বছরের যুবক চিত্তরঞ্জনের মাথার উপর। এই পরিস্থিতিতে বিনা অপারেশনেই তাঁর স্লিপ ডিস্কের ব্যথা সারালেন শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালের পেইন ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় তিনি এতটাই খুশি যে, ধন্যবাদ জানিয়ে দু’পাতার লম্বা চিঠিও দিয়ে গিয়েছেন ইনস্টিটিউটকে। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, সাত মাস আগে বালতি তুলতে গিয়ে তাঁর ব্যথার সূত্রপাত। তারপর ৪০ দিন ভর্তি ছিলেন গৌরহাটি এএসআই হাসপাতালে। এরপর শিয়ালদহ ইএসআই-এ দেখানোর পর মানিকতলায় আসেন। ঠিক হয় অপারেশন করা হবে। এর মধ্যে হয় কোভিড। অস্ত্রোপচার করাতে চাননি তিনি। এখন শিয়ালদহ ইএসআই-এ বিনা অপারেশনেই তিনি অনেকটাই সুস্থ। এখানকার ডাক্তারদের অজস্র ধন্যবাদ প্রাপ্য।
রবিবার এই প্রসঙ্গে ইনস্টিটিউটের কোর্স কোঅর্ডিনেটর ডাঃ সুব্রত গোস্বামী বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রধানত গরিব মানুষই আসেন। তাঁদের অসুস্থতা মানেই কাজ চলে যাওয়া। ভেসে যাবে সংসারও। সেদিক থেকে কোভিড পর্বে চিত্তরঞ্জনের ঘটনাটি ছিল যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। এখন ওঁর ব্যথা কমেছে। স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছে এটাই বড় কথা।’ এদিন যোগযোগ করা হলে ওই শ্রমিকের পরিবার জানিয়েছে, ব্যথার চোটে ওঁর হাঁটাচলা, কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন অনেকটাই ভালো।
শিয়ালদহ ইএসআই সূত্রের খবর, ইনস্টিটিউটে চিত্তরঞ্জনের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। এমআরআই রিপোর্টে দেখা যায়, মেরুদণ্ডে কোমরের কাছে চার ও পাঁচ নম্বর হাড়ের মাঝের চাকতি বা ডিস্ক বেরিয়ে এসেছে। ব্যথার উৎসস্থল সেটাই। চিকিৎসকরা ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ওজন গ্যাস দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। পাশাপাশি ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়। তাতেই অসম্ভব ভালো কাজ দেয়।