বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ঠিক কী হয়েছিল যে কারণে খোদ উপাচার্য সুরঞ্জন দাস সহ শীর্ষকর্তারা পর্যন্ত মামলার শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন? বিষয়টি শুরু হয়েছিল বছর কয়েক আগে। পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল অধ্যাপক নীলাদ্রী চক্রবর্তীকে। তবে, অমিতাভবাবু তখন দাবি জানান, সিনিয়রিটির দিক থেকে তিনি নীলাদ্রীবাবুর চেয়ে এগিয়ে। তাই নিয়ম অনুযায়ী, তাঁরই প্রধান হওয়ার কথা। তবে তা পাত্তা পায়নি। এই দাবি জানিয়ে অমিতাভবাবু তদানীন্তন রাজ্যপাল তথা আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠির দ্বারস্থ পর্যন্ত হয়েছিলেন। তখন বিষয়টি জানতে চেয়ে রাজভবন থেকে উপাচার্যে দপ্তরে চিঠি আসে। তা নিয়ে ব্যাপক জলঘোলা হয়। তবে, শেষ পর্যন্ত নীলাদ্রীবাবুকেই প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। তারপর অমিতাভ গুপ্ত মামলা করেন। মামলা চলাকালীন প্রধান থাকেন বিভাগের সবচেয়ে সিনিয়র অধ্যাপক অমিতাভ দত্ত। তিনি ডিসেম্বরে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ডিন হিসেবেও নিযুক্ত হয়েছিলেন। তবে, সে মাসেই তিনি ছাত্র আন্দোলনে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন উপাচার্যর কাছে। এখনও কোনও বিকল্প না মেলায় অমিতাভবাবুই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ উল্লেখ করেছেন, যাদবপুরের আইনজীবী দাবি, কোনও অধ্যাপকের সিনিয়রিটি নির্ণয়ের ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতেই থাকা উচিত। কারণ প্রথাগতভাবে তাই হয়ে এসেছে। তবে, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী এটা স্পষ্ট, সিনিয়রিটির ক্ষেত্রে অমিতাভ দত্তর পরেই রয়েছেন অমিতাভ গুপ্ত। তাই রায়দানের তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সুরঞ্জনবাবু ফোনে বলেন, এ বিষয়ে বলার কিছু নেই। আদালত যা নির্দেশ দিয়েছে, তাই পালন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের খবর, পদপ্রাপ্তির ভাগ্য অমিতাভ গুপ্তর মন্দ বললেও কম বলা হয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইএলএসএম ফ্যাকাল্টির ডিন হওয়ার দৌড়ে তিনি অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সদস্য বলে সেই পদে তাঁর নিয়োগ নিয়ে আপত্তি তোলে অধ্যাপকদের একাংশ। শেষ পর্যন্ত ডিন হওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায় অমিতাভবাবুর। তাঁর সমসাময়িক ‘প্রফেসর’ পদের শিক্ষকরা এখন উপাচার্য, সহ-উপচার্য পর্যন্ত হয়ে গিয়েছেন। সেই জন্যই কী মরিয়া হয়ে বিভাগীয় প্রধানের মতো আপাতভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি? মামলা এবং মামলার রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি অমিতাভ গুপ্ত।