বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
১৯৭৬ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভগবতপুর কুমির প্রকল্প তৈরি হওয়ার পর প্রতি চার বছর অন্তর সুন্দরবনের নদীতে কুমির ছাড়া হয়ে থাকে। সেই মতো বৃহস্পতিবার এই সরীসৃপদের ছাড়া হল সুন্দরবনের বিদ্যা ফরেস্ট এলাকার নদীতে। যার মধ্যে পাঁচটি কুমির ভগবতপুরের এবং একটি নিয়ে আসা হয়েছে সজনেখালি থেকে। বনদপ্তর সূত্রে খবর, ২০১৮ সালের সুমারি অনুযায়ী, সুন্দরবনের নদীতে কুমির রয়েছে ২৪০টি। যার মধ্যে গণনার সময় ১৪১টি সরাসরি দেখতে পেয়েছেন কর্মীরা। বাকি ৯৯টি কুমিরের সন্ধান মিলেছে অনুসন্ধান করে। ১৯৭৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সুন্দরবনের নদীতে ৬২৯টি কুমির ছাড়া হয়েছে। ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে ডিম ফুটে কুমির ছানা বেরনোর পর চার বছর সেখানে তাদের পরিচর্যা করা হয়। সেখানেই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শেখে কুমিরগুলি। চার বছর পর যখন স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে, তখন তাদের ছাড়া হয় সুন্দরবনের নদীতে।
এদিন নদীতে কুমির ছাড়ার পর রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বিনোদকুমার যাদব বলেন, সুন্দরবনের নোনাজল এলাকায় কুমিরের প্রজনন বাড়াতে কিছুদিন পরপর কুমির ছাড়া হয়। এবছর মোট ৫৫টি কুমির ছাড়া হবে। যার মধ্যে এদিন ছ’টি ছাড়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ৪০টি পুরুষ এবং ১৫টি স্ত্রী কুমির ছাড়া হবে। মূলত চুলকাটি ব্লকের রামগঙ্গা রেঞ্জ এবং সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় এদের ছাড়া হবে। তবে নদীর জলে গা ভাসানোর আগে ওই কুমিরদের গায়ে বিশেষ ধরনের চিহ্ন দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে কতটা এলাকা জুড়ে একটি কুমির ঘুরছে, তা যেমন জানা যাবে, তেমনই তাদের উপর পর্যবেক্ষণও চালানো যাবে।
সুন্দরবনের নদীতে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত জলযানের চলাফেরায় কুমিরের প্রজননে সমস্যা হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ডিম পাড়ার সময় লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে কুমির। পরে বনদপ্তর সেই সব কুমিরকে উদ্ধার করে পুনরায় ছেড়ে দিয়েছে নদীতে। এর আগে পাথরপ্রতিমা, কুলতলি ও ঝড়খালিতে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল কুমির। তাই সুন্দরবনের নোনাজল এলাকায় কুমিরের প্রজনন বাড়াতেই নতুন করে কুমির ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বনদপ্তর। -নিজস্ব চিত্র