বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার নবনির্মিত মাঝেরহাট সেতুর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেতুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয় হিন্দ’। ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়েছিল এই সেতু। রাজ্য সরকার ৩০০ কোটি টাকার উপর খরচ করে এই সেতু নতুনভাবে তৈরি করেছে। ৬৫০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর ভারবহনের ক্ষমতাও আগের থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে ভারবহনের ক্ষমতা ছিল ১৫৫ মেট্রিক টন। এখন তা হয়েছে ৩৮৫ মেট্রিক টন। উদ্বোধনী মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রেলের রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। তারপরও রেল আমাদের কাছ থেকে ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে। একেতেই ব্রিজের জন্য রেল নয় মাস দেরি করিয়েছে, তার উপর এত টাকা নিয়েছে! মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, যে কাজ রেলের দায়িত্ব ছিল, তা করতে হয়েছে রাজ্যকে। শুধুমাত্র অনুমোদনের জন্য রেল ওই টাকা নিতে পারে না। ফেরত দিক। ওই টাকায় অনেক রাস্তা, স্কুল, কলেজ তৈরি হতে পারত। এছাড়াও ৭৭ লক্ষ টাকা বন্দর কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
দিন কয়েক আগে এই ব্রিজ খোলার দাবিতে কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। সেখানে বিজেপি নেতারা ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রেপ্তার হওয়ার নাটক করেছিলেন বলে কটাক্ষ মমতার। তিনি বলেছেন, আমাকে বেহালা চেনাচ্ছে! বেহালার মানুষ দু’বছর কতটা কষ্টে ছিলেন, তা আমি জানি। বেহালা নিয়ে যাঁরা জ্ঞান দেয়, তাঁদের বলি বেহালায় কটা ওয়ার্ড, কটা রাস্তা, কতগুলি পুজো হয়, স্কুল-কলেজ কতগুলি আছে জানেন? মিথ্যা, কথা কুৎসা, বিভাজন করে বেহালাকে বেহাল করবার চেষ্টা করবেন না।
দ্বিতীয় হুগলি সেতুর আদলে তৈরি হওয়া মাঝেরহাট ব্রিজ যাতে সাধারণ মানুষ সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন, সেই আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাস থেকে কেউ যেন থুথু, পানের পিক না ফেলেন, সে কথাও উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি ঘোষণা করেছেন, এই ব্রিজ দিয়ে প্রচুর মোটরবাইক আরোহী যাতায়াত করবেন। ফলে তাঁদের সুরক্ষার স্বার্থে সরকাররের পক্ষ থেকে তিনদিন বিনা মূল্যে হেলমেট বিতরণ করা
হবে। যাঁদের হেলমেট কেনার ক্ষমতা নেই, তাঁদের থানায় নাম নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি রাজ্যে আরও কয়েকটি ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনার কথা মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। তাতে গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ-নিউ মার্কেট উড়ালপুল করার চেষ্টা হচ্ছে। এছাড়াও তারাতলা-টালিগঞ্জ-আনোয়ার শাহ রোড-যাদপুর থানা পর্যন্ত একটি ব্রিজ তৈরির পরিল্পনা চলছে। পার্ক সার্কাস-বালিগঞ্জ ফাঁড়ি পর্যন্ত একটি
ব্রিজ তৈরির বিষয়েও সরকার আলোচনা করছে।
উদ্বোধনের পর মাঝেরহাট ব্রিজে হেঁটে পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিস কুমার, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা-সহ প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। ব্রিজ উদ্বোধনে খুশি এলাকাবাসী। বেহালা ও সংলগ্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষ এসেছিলেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাক্ষী থাকতে।
এদিন রাতে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে খণ্ডন করেছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কে ডি দাস। তাঁর দাবি, এই ব্রিজ নির্মাণ বাবদ রাজ্যের থেকে যে টাকা নেওয়া হয়েছে, তা ভারতীয় রেলের গাইডলাইন ও বিধি মেনেই নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কাজে দেরি হওয়ার অভিযোগও নস্যাত্ করে দিয়েছেন কে ডি দাস। তিনি বলেন, রেলের তরফে কোনও রকম গাফিলতি ছিল না। বৃহস্পতিবার থেকে সাধারণের জন্য এই ব্রিজ খুলে যাওয়ায় আমরা খুশি।