পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৮ হাজার ২৫৯ জন। আর এবছর ওই একই সময় পর্যন্ত এই জেলায় এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ৬২০ জন। গত বছর জেলার শহর ও গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু রোগী ছিলেন যথাক্রমে ১০ হাজার ৩৭৩ জন ও ৭,৮৮৬ জন। সেখানে এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৩২ জন এবং ৮৮ জন।
গত বছর এই সময়ে হাবড়া, অশোকনগর, বিধাননগরের মতো এলাকায় ডেঙ্গুর দাপাদাপিতে নাভিশ্বাস উঠেছিল পুরকর্তাদের। আতঙ্কিত, বিপর্যস্ত ছিলেন সাধারণ মানুষ। হাবড়ায় ২,৪০০ জন, অশোকনগরে ১,৩৩৩ জন এবং বিধাননগরে ১,৩২০ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। দক্ষিণ দমদম, বারাকপুর, বরানগর সহ অন্য পুর এলাকাতেও এই রোগের বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর পুর ও কর্পোরেশন এলাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১১,৭০৩ জন। সেখানে এবার পুর ও কর্পোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু হয়েছে মাত্র ৫৩২ জনের। গ্রামীণ এলাকাগুলির মধ্যে দেগঙ্গা, গাইঘাটা, হাবড়া ১ ও ২, বারাসত ১ ও বাগদায় ত্রাহি ত্রাহি রব পড়েছিল। এই সব গ্রামীণ এলাকায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত মাত্র ৮৭।
যে জেলায় ডেঙ্গু প্রকোপের জন্য শাসকদলের ঘুম ছোটে, স্বাস্থ্যকর্তাদের রক্তচাপ বাড়ে, সেখানে এই বছর ডেঙ্গু অস্বাভাবিক মাত্রায় কমে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস স্বাস্থ্যভবন ও নবান্নে। পঞ্চায়েত বা পুরসভা, বিধানসভা বা লোকসভা— সরকারকে চাপে ফেলতে ডেঙ্গুকে ইস্যু করে বিরোধীরা। সেদিক থেকে ডেঙ্গু মোকাবিলায় এই সাফল্য আসন্ন ভোটে শাসক তৃণমূলকে অক্সিজেন জোগাবে বলেই মত ওয়াকিবহল মহলের। তবে একাংশের অভিযোগ, সরকার প্রকৃত তথ্য গোপন করছে। পরিসংখ্যানে জল আছে।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ তাপস রায় বলেন, সাফল্যের কারণ জেলা প্রশাসনের টিমওয়ার্ক, প্রতি সপ্তাহে পর্যালোচনা ও আত্মসমীক্ষা। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, অনেকগুলি কারণ রয়েছে। এক, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বছরভর ডেঙ্গু মোকাবিলায় সব দপ্তরের নজর। দুই, করোনা পরিস্থিতির জন্য কয়েকমাস লকডাউন ও বাড়িতে মানুষের বেশি থাকা। তিন, গত বছর প্রবলভাবে ডেঙ্গু হওয়ায় বহু মানুষের মধ্যেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া। সমালোচকদের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ জানিয়ে অজয়বাবু বলেন, মৃত্যুর ঘটনা মানুষের চোখ এড়াতে পারে না। আজ নয়তো কাল ধরা পড়বেই। ডেঙ্গু এ বছর যে কমেছে, সেটা মানুষও জানেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ অনির্বাণ দলুই বলেন, মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বেড়েছে। সেটাও ডেঙ্গু হ্রাসের অন্যতম কারণ।