পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
সল্টলেকে অসুরনাশিনীর আরাধনায় থিম-যুদ্ধের তিন আঙ্গিক। সবই কোভিড মহামারীর কঠিন পরিস্থিতিকে ঘিরে। এ কে ব্লকের থিম ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা’। এ ই ব্লকের পার্ট ওয়ানে ‘বন্ধন’। আর এফ ডি ব্লকে ‘ফিরে দেখা সেই শৈশব’। এমনিতেই পুজো-আনন্দের সবই কেড়ে নিয়েছে বেয়াড়া ভাইরাস। নগরবাসীদের কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলছেন—‘মা’য়ের পায়ে অঞ্জলি কখনও অনলাইনে হয়? কোথা থেকে কি যে হয়ে গেল বুঝি না!’ এমন ভরা মন খারাপের মধ্যেই এই তিন ব্লকের থিম-ভাবনা কিছুটা হলেও রঙিন করে তুলছে সল্টলেকের পুজো উৎসবকে।
থালা-বাটি বাজিয়ে তালাবন্দি করা হয় গোটা দেশ। কর্মহীন হয়ে পড়ে বহু পরিযায়ী শ্রমিক। মাইলের পর মাইল হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয় তাঁদের। কোথাও তাঁদের ক্লান্ত-অবসন্ন শরীরকে পিষে দিয়েছে ট্রাক। রেল লাইনে শুয়ে থাকা শ্রমিকদের দেহ ছিন্নভিন্ন করেছে মালগাড়ি। পরিবারের মুখে দু’মুঠো অন্ন জোগাতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছেন কেউ কেউ। দেশজুড়ে শ্রমিকদের এই দুর্বিসহ অবস্থার খণ্ড খণ্ড ছবি উঠে আসছে এ কে ব্লকে। বিভিন্ন ইনস্টলেশন দিয়ে সেজে উঠেছে মন্ডপ। শিল্পী সম্রাট ভট্টাচার্যের কথায়, ‘লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকরা প্রচন্ড ভুক্তভোগী। তাঁদের দুর্দশা তুলে ধরতেই পুজো প্রাঙ্গনে এই উপস্থাপনা।’ মন্ডপ সজ্জার কাজও প্রায় শেষ। অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের।
এ ই ব্লকের পার্ট ওয়ানের পুজোয় শিল্পী পার্থ ঘোষ এবং সিদ্ধার্থ ঘোষের যৌথ ভাবনায় রূপ পেয়েছে ‘মানবিকতার বন্ধন’। পার্থবাবু বলছিলেন, ‘মানুষ তাঁর জীবনযাত্রার চিরাচরিত স্বভাব, অভ্যাস, মানবিকতা এবং মনুষ্যত্বকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছিল। কোভিড মহামারী অনেক কিছু শিখিয়েছে আমাদের। অসহায় ক্ষুধার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এক ‘অন্য মানুষ’। যাঁর জাত-ধর্ম বলে কিছু নেই, আছে শুধু মনুষ্যত্বের পরিচয়।’ পুজো কমিটির সম্পাদক সুপ্রিয় চক্রবর্তী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৈরি হওয়া গাইডলাইন মেনে পুজো হচ্ছে।’
সল্টলেকের অন্যতম বড় পুজোগুলির মধ্যে একটি এফ ডি ব্লক। তাদের এবারের ভাবনা ‘ফিরে দেখা শৈশব’। শিশুদের জন্য অমর সৃষ্টি ‘জঙ্গল বুক’-এর আদলে তৈরি হয়েছে মন্ডপ। থাকছে মোগলী। থিমের লড়াইয়ে নামলেও সরকারি গাইডলাইন মানা হচ্ছে সমানে সমানে। পুজো কমিটির উদ্যোক্তা বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পুজোর সময় অঞ্জলি দেখা যাবে অনলাইনে। পাশাপাশি দেখানো হবে ‘প্রাইম ফ্যাক্টর’ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। কমিটির নির্দিষ্ট ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।’ তবে এবছর আর পাত পড়ছে না মণ্ডপে। বাড়িতে যাবে ভোগের প্রসাদ। সল্টলেক এ কে ব্লকের পুজোমণ্ডপ। -নিজস্ব চিত্র