গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এদিন দুপুরের পর এলাকার বাসিন্দারা ওই ঘর থেকে দুর্গন্ধ টের পান। দুর্গন্ধ ক্রমশ বাড়তে থাকায় এলাকার লোকজন ভিতর থেকে তালাবন্ধ ওই বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন। কারও সাড়া না পেয়ে তাঁরা বেলুড় থানায় ফোন করেন। পুলিস গিয়ে শাবল দিয়ে ঘরের দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। তাঁরা দেখেন, একটি ঘরের মধ্যে দু’টি দেহ পড়ে রয়েছে। সেগুলিতে পচন ধরে যাওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। আর ঘরের মধ্যে একটি খাটে একজন বৃদ্ধা শুয়ে রয়েছেন। লোকজন দেখেও তিনি আবার পাশ ফিরে শুয়ে পড়েন। পুলিস জানিয়েছে, মৃত বৃদ্ধের নাম মনোরঞ্জন সেন (৮০) এবং মৃত বৃদ্ধার নাম রত্না সেন (৭৫)। যিনি খাটে শুয়েছিলেন, তাঁর নাম অমিতা সেন। পুলিস দেহ দু’টি ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি ওই বৃদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
ঠিক কবে এই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে, তা বলতে পারছে না পুলিস। মৃত্যুর কারণই বা কী, তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ মনোরঞ্জনবাবু প্রাক্তন রেলকর্মী। তাঁর মোট পাঁচ বোন ছিলেন। একজন আগেই মারা গিয়েছেন। বেলুড় এলাকাতেই একজনের বিয়ে হয়। এই পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে এলাকার লোকজনেরও তেমন কোনও স্বচ্ছ ধারণা নেই। এক প্রতিবেশী জানান, দিন পনেরো আগে একবার মনোরঞ্জনবাবুকে তাঁরা দেখেছিলেন। তখনই তাঁকে বেশ অসুস্থ দেখাচ্ছিল। তারপর আর কাউকে দেখা যায়নি। ওই বাড়িতে কোনও কাজের লোকও ছিল না। ফলে, দোতলা পেল্লায় বাড়ির ভিতরে কী হচ্ছে, তা জানা যেত না। এদিন অমিতা দেবীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিস জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করে। কিন্তু, তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলায় পুলিস থেমে যেতে বাধ্য হয়। মনোরঞ্জনবাবুর ভাগ্নে দেবেশ্বর দে বলেন, ফোন সবসময় ধরতেন না। দিন দশেক আগে তিনি এসে মামা ও মাসিদের দেখে গিয়েছিলেন। এদিন বাড়ির মধ্যে ঢুকেছিলেন, এরকম একজন প্রতিবেশী বলেন, ঘরের মধ্যে রান্নাবান্না বা খাওয়াদাওয়ার কোনও আয়োজনই চোখে পড়েনি। এঁরা কতদিন অনাহারে ছিলেন অথবা অন্য কী কারণে এরকমটা হল, বলা মুশকিল। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, কমপক্ষে দিন সাতেক আগে মৃত্যু হয়েছে এঁদের। বেলুড় থানার এক অফিসার বলেন, ওই দু’জনেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না বা অন্য কোনও রোগে তাঁদের মৃত্যু কি না, তা ময়না তদন্ত রিপোর্টেই জানা যাবে। তাঁদের মানসিক অসুস্থতা ছিল কি না, তাও জানার চেষ্টা চলছে।