কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
শুধু উঠন বা বাড়িতে জলজমার সমস্যা নয়। গাইঘাটা, মছলন্দপুর, স্বরূপনগর, সগুনায় জল ভাসিয়ে দিয়ে গিয়েছে সমস্ত ফসলের ক্ষেত, বাগান, জমির ধান। এখানকার বাসিন্দারা নিত্যদিনের খাওয়া-দাওয়ার কথা এখন ভুলে গিয়েছেন। শুকনো কাঠের অভাবে এক বেলা রান্না করে তিন বেলা খাচ্ছেন। এক কলসি জল আনতে গেলে নৌকা ছাড়া উপায় নেই। কেউ অসুস্থ হলেও ডাক্তারখানা বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে নৌকাই একমাত্র সম্বল। যেভাবে সমগ্র এলাকা জলের উপর ভাসছে, তাতে রাস্তাঘাট,ডোবা, পুকুর চেনার উপায় নেই।
কিন্তু এভাবে জল জমার কারণ কী? এ থেকে মুক্তিই বা মিলবে কীভাবে? এলাকাবাসীর বক্তব্য, বনগাঁ থেকে বসিরহাট পর্যন্ত ইছামতি নদীর দু’পার বরাবর দখলদারিই এর মূল কারণ। এই গোটা অঞ্চলে নদীর দু’পারের সব বাসিন্দারা যার যার জমির সীমানা বরাবর নদীর পাড়ে মাটি ভরাট করে চাষের জমি বানিয়েছেন। নদীর বুক দখল করে বানানো সেই জমিতে দিব্যি চলছে চাষাবাদ। ফলে ইছামতীর পরিসর অনেকটাই কমে গিয়েছে, সেইসঙ্গে নদীর নাব্যতাও আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। অল্প বর্ষা হলেও জল আর ধরে রাখতে পারছে না ইছামতী। সমস্ত এলাকা প্লাবিত হচ্ছে, সেই সঙ্গে জমা জল সহজে সরছেও না। এলাকার বাসিন্দারা বললেন, ইছামতীর নাব্যতা বাড়ানো গেলেই একমাত্র এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে। যদি বনগাঁ থেকে বেড়িগোপালপুর পর্যন্ত ইছামতি নদীর পাড় বরাবর বিস্তীর্ণ এলাকার সংস্কার করা না হয়, তবে এই অবস্থার পরিবর্তনের কোনও আশা নেই। অবস্থার উন্নতি করতে গেলে সরকারকে ইছামতির দুই পাড়কে দখলদারি থেকে মুক্ত করার দায়িত্ব নিতে হবে। বাসিন্দাদের দখল করে রাখা জমি থেকে মাটি কেটে তুলে তা দিয়ে নদীর পাড়ে উঁচু করে বাঁধ দিতে হবে। এছাড়া ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতাও বৃদ্ধি করতে হবে। তবেই ওই এলাকার সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন দেবনাথ এই বিষয়ে বলেন, প্রত্যেক বছর এই সমস্যা নিয়েই আমাদের চলতে হচ্ছে। কৃষিজমি থেকে মাছচাষ, সব বিষয়েই আমাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। ভোট আসে, ভোট চলেও যায়। নেতাদের কাছ থেকে আমরা আশ্বাস পাই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। বর্তমানে এই করোনা মহামারীতে মানুষ জমা করা টাকাপয়সা সব শেষ করে ফেলেছে। যেটুকু ছিল, তাও নদীর জমা জলের ছোবলে শেষ। মানুষ সর্বস্বান্ত। তাই স্থানীয় প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে একটাই অনুরোধ, এর স্থায়ী সমাধান হোক।
প্রশ্ন করা হলে জেলা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। -নিজস্ব চিত্র