বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কীভাবে মিলল সাফল্য?
জানা গিয়েছে, গত শনিবার এক কাপড়ের দোকানের কর্মীর বিরুদ্ধে ৩ লক্ষ টাকার মাল নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ দায়ের হয় বড়বাজার থানায়। ওই কাপড় অন্যত্র ডেলিভারি করা থাকলেও অভিযুক্ত কর্মী তা করেনি বলে দাবি করা হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্বাসভঙ্গের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিস। দেখা যায়, উত্তম মাহাত নামে ওই অভিযুক্ত কর্মী হুগলির ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা। বড়বাজার থানার অফিসাররা সেখানে হানা উত্তমকে গ্রেপ্তার করেন। কিন্তু, তার কাছে ওই খোয়া যাওয়া মাল ছিল না। চেপে ধরতেই সে জানায়, ওই মাল সে দিয়েছে মহেশতলার বাসিন্দা শেখ গোরা হালদারকে। এরপরই অফিসাররা ঠিক করেন, উত্তমকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে গোরাকে পাকড়াও করা হবে। সেইমতো উত্তমকে দিয়ে গোরাকে ফোন করিয়ে বলা হয়, আরও মাল আছে। এগুলো আরও দামি কাপড়। একটা লরিতে চাপিয়ে সেগুলি নিয়ে আসা হচ্ছে। পুলিসের এই টোপ গিলে ফেলে গোরা। এবার সিনেমার কায়দায় লরিচালকের ছদ্মবেশ ধরেন বড়বাজার থানার এএসআই অর্ঘ্য সিংহ। আর খালাসি হন এসআই সন্দীপ পাল ও প্রীতম তামাং।
পরিকল্পনামতো উত্তমকে সঙ্গে নিয়ে লরিতে মহেশতলার উদ্দেশে রওনা হন তিন অফিসার। লরিতে আগে থেকেই কিছু কাপড় রাখা ছিল। সেগুলি হাতে দিয়ে উত্তমকে পাঠানো হয় গোরার কাছে। আর কিছুটা দূরত্ব রেখে পিছন পিছন আসতে থাকেন ছদ্মবেশী তিন অফিসার। উত্তমকে দেখে সন্দেহ না হলেও পিছনে তিনজনকে আসতে দেখে সন্দেহ হয় গোরার। বিপদ বুঝে সে আক্রা স্টেশন সংলগ্ন রেললাইন ধরে ছুটতে শুরু করে। সময় নষ্ট করে তাকে ধাওয়া করেন দুই অফিসার। প্রায় ২০০ মিটার দৌড়ে তাঁরা ধরে ফেলেন গোরাকে।
কিন্তু গোরার কাছেও চুরির মাল মেলেনি।
জেরায় ধৃত জানায়, ওই মাল সে বিক্রি করেছে রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামকে। গোরার দেওয়া ঠিকানায়
হানা দিয়ে পুলিস ওই দু’জনকেও গ্রেপ্তার করে। সেখানেই উদ্ধার হয় চুরির সামগ্রীর কিছুটা। বাকি মাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চোরাই কাপড়ের কারবারের একটা বড় চক্র
রয়েছে। গোরা, মনিরুল, রফিকুলরা চুরির মাল বেচা-কেনা করে। এরপর লরিতে করে সেই চোরাই মাল পাচার হয় বিভিন্ন জেলায়। রীতিমতো আঁটঘাঁট বেঁধেই চলত এই কারবার। পুলিসের সমস্যা এড়াতে ওই সমস্ত জিনিসের নকল বিলও তৈরি করা হতো বলে জানা গিয়েছে।