রাজু চক্রবর্তী, কলকাতা: লোকসানের ধাক্কা সামলাতে এবার ট্রেন পিছু ই-পাস বুকিংয়ের সর্বোচ্চ সীমা বাড়াতে চলেছে কলকাতা মেট্রো। এবার থেকে ৪০০ নয়। প্রতিটি মেট্রোয় ৫০০ জন যাত্রী সফর করতে পারবেন। উল্লেখ্য, এর আগে করোনার জেরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ট্রেন পিছু ৪০০ জন যাত্রী তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, প্রতিটি মেট্রোয় মেরেকেটে ২০০ থেকে ২৫০ জন যাত্রী হচ্ছে। তার উপর রয়েছে ‘ফলস বুকিং’-এর ধাক্কা। মেট্রোয় চড়বেন না জেনেও বহু যাত্রী উৎসাহের চোটে আগেভাগে ই-পাস বুক করে রাখেন। মেট্রো সূত্রে খবর, ১৪ সেপ্টেম্বর সর্বসাধারণের জন্য প্রথম দিনের সফরে যাত্রী সংখ্যা ছিল ২০ হাজার। যদিও ওই দিন ৫২ হাজার ই-পাস বুকিং হয়েছিল। অর্থাৎ, ফলস বুকিংয়ের সংখ্যা ৩২ হাজার। আবার শুক্রবারের হিসেব বলছে, ৬২ হাজার ই-বুকিং হলেও প্রকৃত যাত্রী সংখ্যা ছিল ৪০ হাজার। যার অর্থ, ডিজিটাল বুকিং এবং বাস্তব যাত্রীর ফারাক ২২ হাজার। সবমিলিয়ে কলকাতা মেট্রো যাত্রীশূন্যতায় ভুগছে। পাশাপাশি লোকসানের বহর চড়চড় করে বেড়ে চলেছে।
এ প্রসঙ্গে কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশি বলেন, এখনও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ফাঁক থেকে যাচ্ছে। ই-পাস বুকিং এবং প্রকৃত যাত্রীদের মধ্যে ঘাটতি খুব বড় সমস্যা। যার ফলে বহু নিশ্চিত যাত্রী পাসের জন্য আবেদন করেও পাচ্ছেন না। এই সমস্যা দূর করতে ই-পাস বুকিংয়ের সর্বোচ্চ সীমা ৫০০ করা হচ্ছে। ই-বুকিংয়ের সংখ্যা বাড়ালে প্রকৃত যাত্রী সংখ্যা ৩০০ থেকে বেড়ে ৩৫০ হবে। এর ফলে করোনা সংক্রান্ত যাবতীয় সুরক্ষাবিধি মানা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে প্রত্যাশিত যাত্রীও জুটবে। সবমিলিয়ে লোকসানের বিষয়টি মোকাবিলা করা যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
অন্যদিকে একইভাবে যাত্রীর অভাবে ধুঁকছে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো। ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হওয়া এই যাত্রাপথে প্রথম দু’দিন যাত্রী
সংখ্যা ১০০ ছাড়ায়নি। গত এক সপ্তাহের অভিজ্ঞতা বলছে, দৈনিক যাত্রী সংখ্যা সর্বোচ্চ ২৫০-এর মধ্যে ছিল। ফলস্বরূপ, সোমবার থেকে সেক্টর ফাইভ-সল্টলেক স্টেডিয়াম রুটে আধ ঘন্টা অন্তর মেট্রো চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজারের বক্তব্য, আশানুরূপ যাত্রী না হওয়ায় আমরা ২০ মিনিটের বদলে ৩০ মিনিট অন্তর ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে পরবর্তী সময়ে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ফের দু’টি ট্রেনের সময়ের ফারাক ২০ মিনিটে নামিয়ে আনা হবে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে, কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া পর্যন্ত মোট ১১০টি  মেট্রো চালানো হচ্ছে। দিনের ব্যস্ত সময়ে ১০ মিনিট এবং অন্যান্য সময়ে ১৫ মিনিট অন্তর ট্রেন চলছে। মেট্রো সূত্রে খবর, পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগামী মাস থেকে অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হবে। যদিও আজ সেক্টর ফাইভ-সল্টলেক এবং নিউ গড়িয়া-নোয়াপাড়া দু’টি রুটেই মেট্রো চলাচল বন্ধ থাকছে। অন্যদিকে রবিবার রাত আটটা থেকে ই-পাস বুকিংয়ের পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।