কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
করোনা থেকে বাঁচতে এখন সবার পকেটে স্যানিটাইজার। গত ছ’মাসে জীবাণুমুক্তির এই দাওয়াইয়ে ব্যবহার হিতে বিপরীতও হয়ে উঠছে। স্যানিটাইজারে বিষক্রিয়া নিয়ে প্রচুর ফোন আসছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ‘পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার’-এ। মানুষের অজ্ঞতা এতটাই যে, ফোন করে অনেকে জানতে চাইছেন, ‘স্যানিটাইজার খেলে কি গোটা শরীর জীবাণুমুক্ত হয়?’ এমন প্রশ্ন শুনে তাজ্জব সেন্টারের প্রধান তথা ফরেন্সিক মেডিসিনের অধ্যাপক ডাঃ সোমনাথ দাস। তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে স্যানিটাইজার নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। ইতিমধ্যেই অন্তত দু’টি ঘটনা পেয়েছি, যেখানে স্যানিটাইজার খেয়ে মারাত্মক বিষক্রিয়ার কবলে পড়েছে মানুষ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয়।’ সূত্রের খবর, মৃতদের বাড়ি উত্তর কলকাতায়। দু’জনেই মধ্যবয়স্ক। একজনের অতিরিক্ত মদ্যপানের পূর্ব ইতিহাস রয়েছে। দু’টি দেহেরই ময়নাতদন্ত হয়েছে আর জি করে।
সূত্রের খবর, এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে ৩০-৩৫টি করে ‘স্যানিটাইজার পয়জনিং’য়ের ফোন আসছে ইনফরমেশন সেন্টারে। বাচ্চারা ভুল করে স্যানিটাইজার খেয়ে ফেললে কী করা উচিত, অধিকাংশ জিজ্ঞাস্যই তা নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভুলবশত একটু-আধটু খেলে বড় বিপদ হওয়ার আশঙ্কা কম। কিন্তু পরিমাণ বেশি হলে মৃত্যুও হতে পারে। তাই স্যানিটাইজারের বোতল শিশুদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখা বাঞ্ছনীয়।
স্যানিটাইজারে কেন বিষক্রিয়া হচ্ছে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে প্রধানত রয়েছে আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল। অতিরিক্ত মাত্রায় (৩০০ এমএল বা তার বেশি) সেবনে শরীরে অ্যালকোহলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এটি সরাসরি মানবদেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রক ব্রেন স্টেমে প্রভাব ফেলে। এই ব্রেন স্টেমই শ্বাসকার্য সহ বিভিন্ন কাজ চালায়। অতিরিক্ত আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল ওই অংশকে কাজ করতে দেয় না। তীব্র শ্বাসকষ্টে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুরা ভুলবশত খেয়ে ফেললে লক্ষ্য করুন, প্রচণ্ড কান্নাকাটি করছে কি না, মুখের ভিতরের অংশ সাদা হয়ে গিয়েছে কি না, কিংবা ঝিমিয়ে পড়ছে কি না। কারণ, স্যানিটাইজারে থাকা অ্যালকোহল মুখের ভিতরের অংশের ক্ষয় বা ইরোশন ঘটায়। তাই মুখের ভিতর মিউকাস ঝিল্লির আবরণ সাদা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে ঠান্ডা দুধ, আইসক্রিম, ডিমের সাদা অংশ খাওয়ানো যেতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। এই সংক্রান্ত তথ্য জানতে ফোন করা যেতে পারে পয়জন ইনফরমেশন সেন্টারে (ফোন নং ১৮০০৩৪৫০০৩৩, সকাল ৮টা-রাত ১২টা)।