বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মৃত্যু হয়। অরিজিতের একটি চারচাকা গাড়ি রয়েছে। সেটাই একটি অ্যাপ ক্যাব সংস্থায় ভাড়া দিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু, করোনা-কালে লকডাউনের জেরে রাস্তায় গাড়ি বের করতে না পেরে তাঁর সেই আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে বকেয়া পড়ে গিয়েছিল গাড়ির কিস্তির টাকা। গত ৭ মাস ধরে বাড়িভাড়াও দিতে পারেননি ওই দম্পতি। তার উপর বাজারের ধার-দেনাও হয়ে গিয়েছিল বিস্তর। তাও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। এরই মধ্যে তাঁদের শিশুসন্তান জটিল অসুখে মারা গেলে মানসিক অবসাদ ডুবে যান ওই দম্পতি। এদিন সকালে চেতলার বাড়ি থেকে সম্পূর্ণাকে ফোন করেন তাঁর মা। কিন্তু, মেয়ের ফোন সুইচ অফ পান তিনি। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পেরে এরপর সম্পূর্ণার মা যোগাযোগ করেন অরিজিতের বাবার সঙ্গে। তিনিও ছেলেকে ফোন করে দেখেন তাঁর ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। এরপর অরিজিতের বাবা ফোন করেন বাড়িওয়ালাকে। সেই সময় আবাসনের ছাদে কিছু কাজ করছিলেন বাড়িওয়ালা। অরিজিতের বাবার ফোন পেয়ে তিনি নীচে এসে দম্পতির ফ্ল্যাটের দরজায় বেশ কয়েকবার ধাক্কা দেন। কিন্তু, কেউ দরজা খোলেনি। এরপর তিনি প্রতিবেশীদের ডাকেন। সবাই মিলে ডাকাডাকি করলেও লাভ হয়নি। এরপর জানলা দিয়ে উঁকি মেরে তাঁরা দেখেন। গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে সিলিং থেকে ঝুলছেন সম্পূর্ণা। আর অরিজিতের দেহ পড়ে রয়েছে মেঝেতে।
এই দৃশ্য দেখে সঙ্গে সঙ্গে বাড়িওয়ালা খবর দেন অরিজিৎ ও সম্পূর্ণার বাড়িতে। খবর যায় চারু মার্কেট থানাতেও। পুলিস এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মেঝেতে পড়ে থাকা অরিজিতের গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো ছিল। দড়ির বাকি অংশ ঝুলছিল সিলিং থেকে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, দড়ি ছিঁড়ে নীচে পড়েছে অরিজিতের দেহ। কিন্তু, পরে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, দড়িটি ছিঁড়ে পড়েনি। স্বামীকে ঝুলতে দেখে শেষ মুহূর্তে হয়তো তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন সম্পূর্ণা। কিন্তু, স্বামী মারা গিয়েছেন বুঝতে পেরে তিনিও চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।