নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: জোর করে কীটনাশক খাইয়ে এক গৃহবধূকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের যাদবপুর পশ্চিমপাড়ায়। মঙ্গলবার বারাসত হাসপাতালে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃত বধূর নাম ডালিয়া খাতুন (২৩)। তাঁর বাবা মিকাইল মল্লিক জামাই সহ শ্বশুরবাড়ির চারজনের বিরুদ্ধে দেগঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা পলাতক।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে বেড়াচাঁপা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের যাদবপুর গ্রামের মনিরুল মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল আমুলিয়া পঞ্চায়েতের রায়পুর গ্রামের ডালিয়ার। মৃতার বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বিয়ের মাস ছ’য়েক পরই অতিরিক্ত টাকার দাবিতে ডালিয়ার উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। সম্প্রতি একটি বাইকও দাবি করেছিল মনিরুল। কিন্তু ডালিয়ার বাপের বাড়ি তা দিতে পারবে না বলায় অত্যাচার বেড়ে যায়। গত ৫ আগস্ট এই নিয়ে ডালিয়ার সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের অশান্তি হয়। ডালিয়ার বাবা মিকাইল মল্লিক বলেন, ওইদিন রাত আটটা নাগাদ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির পড়শি একজন ফোন করে জানান, ডালিয়াকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করছে। শুনে আমি সেখনে গিয়ে দেখি, ডালিয়া মেঝেতে শুয়ে ছটফট করছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জানায়, মেয়ে বিষ খেয়েছে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনও তৎপরতাই দেখায়নি। শেষে আমরাই মেয়েকে নিয়ে প্রথমে দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে সেখান থেকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক সপ্তাহ ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বারাসত হাসপাতালে মৃত্যু হয় ডালিয়ার।
অন্যদিকে, অশোকনগরের গুমা নবপল্লির ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ পূজা শীলেরও মৃত্যু হল বারাসত হাসপাতালে। মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছে, আগুনে ওই গৃহবধূর শরীরের প্রায় সবটাই ঝলসে গিয়েছিল। যে কারণে তাঁকে বাঁচানো অসম্ভব হয়ে ওঠে। হাসপাতালে ভর্তি করার পর প্রায় ৪৮ ঘণ্টা লড়াই করে তিনি মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন। এদিকে, পূজার বাবা রবীন্দ্রনাথ বারুইয়ের দাবি, ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ফাঁসি চাই। পুলিস ইতিমধ্যে পূজার স্বামী বিপুল শীল এবং শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে।