কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
কিন্তু কলকাতার বিনোদের নাম ছড়িয়েছিল কলসেন্টার খুলে জালিয়াতিতে। আর সেটাই তার কাল হল। পূর্ব পুঁটিয়ারির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। তার বিরুদ্ধে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার বিনোদকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে পুলিস হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কীভাবে ফাঁস হল বিনোদের কীর্তি? বিহারের বাসিন্দা আনন্দ নামে এক ব্যক্তি ওই ব্যাঙ্কে অভিযোগ করেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ হাজার টাকা উঠে গিয়েছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতিমতো টাকা পাননি। আনন্দের টাকা যে অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয় তার তথ্য খতিয়ে দেখে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তখন তাদের নজরে আসে গত ৬ মাস ধরে ওই অ্যাকাউন্টে প্রতিদিনই মোটা অঙ্কের টাকা ঢুকছে। দ্রুত তা তুলেও নেওয়া হচ্ছে। কে বা কারা এই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলছে, তা জানতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নজরদারি শুরু করে। সোমবার ব্যাঙ্কে আসে চমন সিংহ নামে এক ব্যক্তি। সে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে চায়। ব্যাঙ্ক কর্তারা আটক করে চমনকে। সঙ্গে সঙ্গে রিজেন্ট পার্ক থানায় খবর দেন তাঁরা। পুলিস এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। চমনকে জেরা করে পুলিস জানতে পারে, এই অ্যাকাউন্টটি তার। সে আসলে শেখ বিনোদের গাড়ির চালক। বিনোদই তাকে এই অ্যাকাউন্ট খুলতে বলে। বিনোদের নির্দেশে সে টাকা তুলত।
পুলিসের একটি সূত্রের খবর, চমনের মুখে শেখ বিনোদের নাম জানতে পেরে নড়েচড়ে বসে তদন্তকারীরা। গভীর রাতে বিনোদের ডেরায় হানা দেয় পুলিসের বিশেষ বাহিনী। তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। টাকা কোথা থেকে আসছে এই নিয়ে শুরু হয় ম্যারাথন জেরা। পুলিস জানতে পারে, আজাদগড়ে একটি কলসেন্টার রয়েছে। সেখান থেকে ফোন করে লোকজনকে ঠকানো হচ্ছে। চাপ দিতে বিনোদ স্বীকার করে এই কলসেন্টারের মালিক সে। একটি কিংবা দু’টি নয়, কলকাতাজুড়ে ১০-১২টি কলসেন্টার রয়েছে তার। প্রচুর লোক সেখানে কাজ করে। আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছল নন, অথচ কম্পিউটারের কাজে পারদর্শী এমন ছেলে-মেয়েদের চাকরি দেওয়া হতো। তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ সহ ভিন রাজ্যে বিভিন্ন ব্যক্তিদের ফোন করতেন। তাঁদের বলা হতো, একটি লটারি প্রতিযোগিতাতে তাঁরা কয়েক লক্ষ টাকার পুরষ্কার জিতেছেন। একটি মেসেজ পাঠানো হতো তাঁদের মোবাইলে। যাঁরা এই টোপ গিলতেন, তাঁদের বলা হতো টাকা পেতে গেলে প্রসেসিং ফি লাগবে। এর জন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে দিত বিনোদের লোকেরা। অনলাইনে টাকা জমা করতে বলা হতো। একবার টাকা জমা করার পরে বিভিন্ন অজুহাতে ধাপে ধাপে আরও টাকা হাতিয়ে নিত বিনোদ। প্রতিবার ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলতেন কলসেন্টারের কর্মীরা। কিন্তু আসল তথ্য হল, অ্যাকাউন্টগুলির কোনওটিরই মালিক বিনোদ নয়। তার চালক, পরিচারক এবং ঘনিষ্ঠদের কাগজপত্র জমা দিয়ে এগুলি খোলা হয়। এখনও পর্যন্ত এই ধরনের ১২টি অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এখানে টাকা জমা পড়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টাকা তুলে নিত বিনোদের লোকজন।