পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
সুশান্ত দাস বিভিন্ন ক্যাটারিং সংস্থায় পরিবেশনের জন্য লোকের জোগান দেন। এটাই তাঁর ব্যবসা। রবিবার রাতে তাঁর খুড়তুতো ভাইজির এনগেজমেন্টের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে খাওয়াদাওয়ার মূল দায়িত্বে ছিলেন সুশান্তই। সেসব সেরে রাত একটা নাগাদ বাড়ি ফেরেন তিনি। তবে বাড়িতে ঢোকার আগেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় গুড্ডুর। সুশান্ত দাসের দিদি সুষমা দাসের কথায়, সেই সময় গুড্ডু পিছন থেকে আচমকা গুলি চালায় ভাইকে। তবে তিনি যে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নন, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। কথা প্রসঙ্গে সুষমাদেবী বলেন, ভাইয়ের পাশের বাড়িতেই আমি থাকি। রাত দেড়টা নাগাদ হঠাৎ আমার দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ হয়। উঠে গিয়ে দেখি, ভাই দাঁড়িয়ে রয়েছে রক্তাক্ত অবস্থায়। ঘাড়ের নীচে থেকে রক্ত ঝরছে। সেই সময় ওর জ্ঞান ছিল। ক্ষতের জায়গাটি পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখি, ঘাড়ের নীচে ওই জায়গায় কিছু একটা ঢুকে রয়েছে। তখনই ভাই জানায়, গুড্ডু গুলি করেছে। কথা বলতে বলতেই সংজ্ঞা হারায় সুশান্ত।
অত রাতে ভাইকে নিয়ে বেলেঘাটায় এক বেসরকারি নার্সিংহোমে যান সুষমাদেবী। কিন্তু সেখানে ভর্তি করা যায়নি। কারণ, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, তাদের এখানে ইমার্জেন্সি অপারেশনের ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় রোগীকে রক্তও দিতে হতে পারে। অতঃপর তিনি সুশান্তকে নিয়ে ছোটেন ইএম বাইপাসের ধারে এক নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে। প্রথমে সেখানে ভর্তি নেয়নি তারা। রোগী গুলিবিদ্ধ হওয়ায় খবর দেওয়া হয় পুলিসকে। শেষমেশ পুলিসের হস্তক্ষেপেই ভর্তি করা হয় সুশান্তকে। ভোর রাতে হয় অপারেশন।
এদিকে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই গুড্ডু সিং ওরফে শর্মা সকাল পর্যন্ত এলাকায় ছিল। তবে পুলিস আসার আগে সকাল ৮টা নাগাদ সে তার পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়ে। নাছোড় পুলিস অবশ্য সন্ধ্যার মধ্যেই খোঁজ পায় তার। বেলেঘাটা অঞ্চলেই সে ঘাপটি মেরে ছিল। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেরায় অবশ্য অন্য কথা শুনিয়েছে গুড্ডু। সে পুলিসকে জানিয়েছে, যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছে, সেটি তার নয়। তার হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না। অত রাতে সুশান্ত বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ কী, তা জানতেই এগিয়ে এসেছিল সে। সেই সময় সুশান্তর হাতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। নাড়াচাড়া করতে গিয়ে আচমকা সেখান থেকেই ছুটে যায় গুলি। তাতেই জখম হয়েছে সুশান্ত। পুলিস তার বক্তব্যের সঙ্গে সুশান্ত দাসের বয়ান মিলিয়ে দেখতে চায়। তিনি সুস্থ হলে তাঁর বয়ান নেওয়া হবে। গুড্ডুর এই দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে সুশান্ত বেআইনি অস্ত্র মজুতের অভিযোগে দুষ্ট হবেন। সেই আগ্নেয়াস্ত্রই বা তিনি কোথা থেকে পেয়েছেন, সেই প্রশ্নও উঠে যাবে। স্বভাবতই খুনের চেষ্টার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিস মনে করছে, ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই হয়ত এই ঘটনা। তবে গুলিচালনার ঘটনা দেখার পরেও গুড্ডু কেন পালিয়ে গিয়েছিল বা সকাল হতেই কেন বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছেন পুলিস অফিসাররা।