কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
সোমবার রাত থেকে শুরু হয়েছে পাণ্ডুয়ার ব্যারামহল্লা গ্রামের ওই মৃতকে গোর দেওয়ার প্রক্রিয়া। প্রশাসন জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালের মধ্যেই সমস্ত কাজ করে ফেলা হবে। সেই সঙ্গে রানাগড়ের বাসিন্দাদের বেনজির উদ্যোগ নিয়েও সবমহলে চর্চা শুরু হয়েছে। করোনায় মৃতকে শেষ সম্মানটুকু না দেওয়ার যে চলতি ধারা, তাতে পাণ্ডুয়া নতুন অধ্যায় যোগ করতে পারে। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, একের পর গ্রামের মানুষ যখন ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন খুবই আক্ষেপ হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত রানাগড়ের মানুষ মানবিকতার যে পরিচয় রেখেছেন, তাতে আমরা আপ্লুত। শুধু উদারতা নয়, করোনা নিয়ে সচেতনতার পরিচয়ও দিয়েছে ওই গ্রাম। মৃতের এক আত্মীয় বলেন, যে গ্রামে ওঁনার জন্ম, সেই গ্রামই মৃত্যুর পরে সামান্য জমি দিতে চায়নি। অথচ মৃত ব্যক্তি কতক্ষণ সংক্রমণ ছড়াতে পারেন, তা নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা আছে। রানাগড়ের মানুষের কাছে ওই পরিবার সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবে। যেভাবে আগ বাড়িয়ে ওনারা মৃত মানুষকে সম্মান দেখিয়েছেন, তা ভোলার নয়।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ জুলাই পাণ্ডুয়ার ব্যারামহল্লা গ্রামের ওই মধ্যবয়সির মৃত্যু হয়েছিল। সেই দিন থেকেই তাঁর জন্য দুই গজ জমি খুঁজতে গিয়ে নাকাল হয়েছে পরিবার। বিষয়টি প্রশাসনের কাছে গেলে তারাও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বাসিন্দাদের আপত্তিতে একের পর এক গোরস্থান থেকে ফিরে আসতে হয় প্রশাসনকে। প্রথমেই ওই ব্যক্তির পরিবারকে ফিরিয়ে দেয় তাঁর জন্মভিটে ব্যারামহল্লা। অনেক অনুনয় বিনয় করেও জন্মভিটের গোরস্থানে দুই গজ জমি জোটেনি। এরপর পাণ্ডুয়ার নিয়ালা গ্রামেও প্রশাসন ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করে। কিন্তু লাভ হয়নি। রবিবার স্থির হয়েছিল বোসপাড়ার একটি ব্যক্তিগত গোরস্থানে ওই ব্যক্তিকে কবরস্থ করা হবে। কিন্তু সোমবার সেখান থেকেও আপত্তি শুরু হয়। ইতিমধ্যে কেটে গিয়েছে ১১দিন।
এরপর সোমবারই প্রশাসনের তরফে বাঁটিকা বৈঁচি ও সিমলাগড় ভিটাসিন গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে প্রস্তাব যায়। বাঁটিকা বৈঁচি মুখ ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু সিমলগড় ভিটাসিনের বাসিন্দারা সাগ্রহে ওই ব্যক্তিকে গ্রহণ করতে রাজি হয়ে যান। অসুস্থ বা মৃত করোনা রোগীকে ‘দূর ছাই’ করাটাই যেখানে নিয়ম হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেখানে রানাগড়ের ওই আগ্রহ বিরল বইকি। যদিও গ্রামবাসীরা বলছেন, আরও আগে জানলে ১১ দিন অপেক্ষা করতে হতো না।