নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে যা জায়গা রয়েছে, তার তুলনায় বন্দির সংখ্যা ২৩ শতাংশ বেশি। দু’হাজারেরও বেশি বিচারাধীন বন্দিকে আগাম জামিন ও আসামিদের প্যারোলে ছাড়ার পরেও এই অবস্থা। যা এই করোনা পর্বে বিপজ্জনক। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল বি রাধাকৃষ্ণাণের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চকে একথা জানানো হয়। আদালতের নির্দেশেই গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছে বেঞ্চ। ১০ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি। আদালতে জমা হওয়া সরকারি নথি অনুযায়ী, ২৬ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ২৯ জন বিচারাধীন বন্দি এবং ৭৩০ জন আসামিকে প্যারোলে তিন মাসের জন্য ছাড়া হয়েছে। রাজ্যে ৬০টি সংশোধনাগার রয়েছে। তাতে থাকতে পারে ১৯ হাজার ৫৩ জন বন্দি। অথচ গত মার্চ মাসে এই সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ১৭৮ জন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো হাইকোর্ট পদক্ষেপ করার পর ৩০ জুন এই সংখ্যা নেমে হয় ২৩ হাজার ৪৭৫। অর্থাৎ এখন সংশোধনাগারগুলির ‘ওভারঅল অকুপেন্সি রেট’ ১২৩ শতাংশ। যা কারাকর্তাদের মতে বিপজ্জনক। বিশেষ করে এই মহামারির সময়ে। এই মামলায় আদালত বান্ধব আইনজীবী তাপস ভঞ্জ এই প্রেক্ষাপটে এমন কিছু অভিযোগ এদিন বেঞ্চের সামনে তোলেন, যা গুরুতর। এই আইনজীবী বেঞ্চকে জানান, রাজ্যে কারাবন্দির সংখ্যা এমন জায়গায় গিয়েছে যে, সব বন্দি একসঙ্গে ঘুমোতে পারেন না। এক দল ঘুমলে, অন্যরা জেগে বসে থাকেন। এই অবস্থায় ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখা কীভাবে সম্ভব!
তাঁর অভিযোগ, অধিকাংশ সংশোধনাগারে ডাক্তার নেই। ফলে স্বাভাবিক চিকিৎসা পরিষেবা থেকে অধিকাংশ বন্দি বঞ্চিত হচ্ছেন। বহু জায়গায় ফার্মাসিস্ট দিয়ে চিকিৎসার কাজ চালানো হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এও জানান, কারাকর্মীরও অভাব রয়েছে। যে কারণে ২০১৮ সালেই হাইকোর্ট শূন্যপদে কারাকর্মী নিয়োগ করতে বলেছিল। এছাড়াও অভিযোগ, বহু বন্দি নানা রোগে ভুগছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করা দরকার। কিন্তু, সরকারি হাসপাতালে জায়গা মিলছে না। এই অবস্থায় সব বন্দিদের করোনার পরীক্ষাও হচ্ছে না। সব মিলিয়ে জেলবন্দিরা অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছেন।