নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: একেবারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন পুলিসকর্মীরা। নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। দিন বা রাত বলে কার্যত কিছু থাকছে না। কিন্তু তাঁদেরও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। আর তাই প্রতিদিন সকালে থানায় পুলিস আধিকারিক-কর্মীদের যোগব্যায়ামের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইমতো কল্যাণী মহকুমার হরিণঘাটা, কল্যাণী এবং চাকদহ থানায় প্রতিদিন সকালে যোগব্যায়াম করা হচ্ছে। থাকছে শারীরিক কসরতও। মাঠে পাঁচ-সাত কিলোমিটার দৌঁড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রতিদিনের খাবারের ব্যাপারেও কড়া নিয়ন্ত্রণবিধিও চালু করা হয়েছে।
কল্যাণীর এসডিপিও তারকশঙ্কর ভট্টাচার্য বললেন, পুলিসকর্মীরা অসুস্থ হলে চলবে না। কারণ চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের মতো পুলিসও ফ্রন্টলাইনে থেকে কাজ করছে। তাই তাদের সবদিক থেকে সুস্থ থাকতে হবে। সেইমতো উপরমহল থেকে নির্দেশ এসেছে, থানাগুলির প্রত্যেক পুলিসকর্মী ও আধিকারিকদের যোগব্যায়াম, শারীরিক কসরত করতে হবে। খাবারের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট বিধি মানতে হবে। সেইমতো তিনটি থানায় এব্যাপারে যাবতীয় নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছি। হরিণঘাটা থানার এক পুলিস আধিকারিক বলেন, নিত্যদিন ভোরে এই শারীরিক কসরতের জেরে অনেকেই সুস্থ রয়েছেন। সময় এবং বিধি মেনে আমরা খাবারও খাচ্ছি। কারণ যেভাবে রাস্তায় নেমে করোনা মোকাবিলা করতে হচ্ছে তাতে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ তো থাকেই। তাই এগুলি আমাদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার শক্তি জোগাচ্ছে।
কল্যাণী মহকুমায় এখনও পর্যন্ত দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার এবং দু’জন পুলিসকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। তবে বর্তমানে আক্রান্তের তালিকায় কেউ নেই। কল্যাণী মহকুমা পুলিসের এক কর্তা বলেন, পুলিসকর্মীদের প্রথম দিন থেকেই অত্যন্ত সতর্কভাবে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল। তবে কাজের ক্ষেত্রে কোনও ফাঁকি দেয়নি কেউই।
বুধবার নদীয়ায় আক্রান্ত ৩৫জনের মধ্যে ১১জন এই মহকুমার। যার মধ্যে চাকদহ ব্লকে চারজন, চাকদহ পুরসভা এলাকায় তিনজন, গয়েশপুর পুরসভা এলাকায় দু’জন এবং হরিণঘাটা পুরসভা এলাকায় দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবারই জেলাশাসক বিভু গোয়েল চাকদহ এবং কল্যাণী এলাকায় বিশেষ নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেছেন। কারণ, জেলায় এই দু’টি এলাকায় আক্রান্তের হার সবচেয়ে উদ্বেগজনক। এদিনও তিনি ফোনে বলেন, আমাদের জেলায় নমুনা নেওয়ার হার ভালোই। তাই আক্রান্তদের সম্পর্কে বিশদে জানা যাচ্ছে। এলাকাগুলিতে বাসিন্দাদের আরও সচেতন করার বার্তা দিতে আধিকারিক, বিডিও এবং পুলিসকে বলেছি। একইসঙ্গে কোথাও কোনও খামতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে বিস্তারিত জানাতে বলেছি।
বুধবার লকডাউনে তিনটি থানার অন্তর্গত প্রায় সব এলাকাতেই নজরদারি চালায় পুলিস। বিশেষ করে পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে কড়া নজর ছিল। সেখানে কোথাও দোকানপাট খোলা রয়েছে কিনা, তাস-গল্পের আড্ডা চলছে কি না খতিয়ে দেখে পুলিস। কয়েকটি জায়গায় ধমক দিয়ে ঘরে ঢোকানো বা দোকানপাট বন্ধ করা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই লকডাউন পর্ব কেটেছে।